বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনাকাঙ্খিত সেই চিরাচরিত নিয়মের বদলে রংপুরে কোন ধরণের অঘটন ছাড়াই সম্পন্ন হলো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। উৎসবমুখর পরিবেশের এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রায় সকল প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু বলেছেন: নির্বাচনে একজন হারবে একজন জিতবে। এই হারজিতের প্রতিযোগিতায়ই আমরা নেমেছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মন-মানসিকতা ঠিক রেখে যেন প্রার্থীরা সবাই ভাই হিসেবে এবং রংপুরের সন্তান হিসেবে একে অপরকে কাছে টেনে নিয়ে কাজ করে যেতে পারেন সেই প্রার্থনা করেন তিনি। বিএনপি দলীয় প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা ভোট দিয়ে বেরিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচনী পরিবেশের বিষয়ে একই কথা বলেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি বলেন: আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনের দায়িত্বে যারা আছেন তারা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। মেয়র প্রার্থীদের এই বক্তব্য আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়েও আমাদেরকে আশাবাদী করে তোলে। আমরা বিশ্বাস করি, একইভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য অবশ্য নির্বাচন কমিশনসহ সকল রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা মূল বিষয়। এক্ষেত্রে সকলের সদিচ্ছা না থাকলে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তবে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা থাকলে কোন ধরনের সংঘাত ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এমনকি নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, তা মেনে নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন প্রার্থীরা। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই দেশের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিজেদের মধ্যকার মতবিরোধগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আহ্বান জানাই। আমরা আশা করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে রংপুরের মতোই একটি ‘মডেল নির্বাচন’।