প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এর মধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে মিসরের। এ অবস্থায় আরও বড় দুঃসংবাদ মিশরীয়দের জন্য। ২৮ বছর পর মিসরকে বিশ্বকাপে তুলেছিলেন যে নায়ক, সেই মোহামেদ সালাহ জাতীয় দল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেবেন? এমন শঙ্কার খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন। পরে একটি সূত্রের বরাতে নিশ্চিত করে ইএসপিএন ফুটবল।
বিশ্বকাপে অনুশীলনের জন্য চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী গ্রোজনিতে বেস ক্যাম্প করেছিল মিসর। গত শুক্রবার সালাহদের বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ। এরপরই সালাহকে নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণাও দেন কাদিরভ। এ ঘটনার পরই মিসর জাতীয় দলের হয়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সালাহ। সিএনএন অন্তত এমন দাবিই করেছে।
কাদিরভ সামাজিক মাধ্যমে বলেন, ‘মোহামেদ সালাহ চেচেন প্রজাতন্ত্রের একজন সম্মানিত নাগরিক! এটা ঠিক! আমি মোহামেদ সালাহ ও মিশরীয় দলের সম্মানে ডিনার পার্টি দিয়েছি।’
২০০৪ সাল থেকে চেচনিয়ার নেতা কাদিরভ। বিশ্বব্যাপী তিনি ‘বিতর্কিত’ ব্যক্তিত্ব হিসেবেই পরিচিত। কারণ নিজ জনগণের উপর তার কঠোর শাসননীতি এবং বিশেষ করে সমকামী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক দমনপীড়ন।
বিশ্বকাপে রোনালদো-মেসি-নেইমারদের সঙ্গে সম্ভাব্য তারকা হিসেবে উচ্চারিত হয়েছে সালাহর নামও। কিন্তু চোটের কারণে প্রথম ম্যাচে নামতে পারেননি, দলও হেরেছে ৯০ মিনিটের গোলে। দ্বিতীয় ম্যাচে নেমেছেন, গোলও করেছেন, তবু দলের হার এড়াতে পারেননি। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকেও গেছে মিসর।
কিন্তু দলের ব্যর্থতা নয়, সালাহ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে যতি টানার কথা ভাবছেন রাজনৈতিক কারণে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর সালাহ কাদিরভের সঙ্গে দেখা করার পর সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। এরপর নাগরিকত্বের ঘটনায় সেই আলোচনা আরও উসকে দেয়া হয়েছে। নিজেকে রাজনৈতিক গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে দিতে চান না সালাহ। দরকার হলে মিসরের জাতীয় দলে আর না খেলার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নিতে পারেন বলে জানিয়েছে সালাহর এক ঘনিষ্ঠ সূত্র।
মিশরীয় ফুটবল ফেডারেশন অবশ্য তড়িঘড়ি করেই এক বিবৃতি দিয়েছে। সালাহ সুখেই আছেন উল্লেখ করে তাতে বলা হয়েছে, ‘সালাহ’র জাতীয় দল ছাড়া খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। মো এখনও ক্যাম্পে আমাদের সঙ্গে আছে এবং সে বেশ সুখী ও খুশি। তিনি একই সঙ্গে সতীর্থদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া ও হাসি তামাশা করছেন। ঠিকঠাক মতো অনুশীলনও করছেন। এর মানে হল তার কোনও সমস্যা নেই।’