একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিরোধী দলের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসনীয় এ আহ্বান আশার আলো জ্বালালেও তা মুহূর্তেই হতাশায় পরিণত হয় বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিক্রিয়ায়। কারণ, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসিচব বলেছেন, এই সংসদকে কিভাবে সংসদ হিসেবে ধরে নেয়া হবে? আমরা ইতোমধ্যে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। এই মুহূর্তে সংসদে যাওয়ার বা শপথ নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। শনিবারও বিএনপি মহাসচিবসহ দল ও জোটের অন্যান্য নেতারা একই সুরে কথা বলেছেন। জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে যা কখনোই কাম্য নয়।
আমরা মনে করি, নানা ধরনের ভিন্নমত সত্ত্বেও দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য জরুরি। আর আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এর ন্যূনতম চিহ্ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তবে ওই ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন: একাদশ সংসদে বিরোধী দলের সদস্য সংখ্যা নিতান্তই কম। তবে, সংখ্যা দিয়ে আমরা তাদের বিবেচনা করব না। সংখ্যা যত কমই হোক, সংসদে যেকোন সদস্যের ন্যায্য ও যৌক্তিক প্রস্তাব/আলোচনা/সমালোচনার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এমন মানসিকতাকে অভিনন্দন জানাই।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অপরিহার্য। কিন্তু এটা স্বীকার করতে হবে যে, দশম জাতীয় সংসদের শুরু থেকে সত্যিকারের বিরোধী দলের সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। এখন বিরোধী দলের সদস্যরা যদি প্রধানমন্ত্রীর এমন আশ্বাসের পরও শপথ না নেন, তা দুঃখজনক।
আমরা আশা করি, দেশের স্বার্থে সরকারি দলকে যেমন ছাড় দেয়ার মানসিকতা লালন করতে হবে, ঠিক তেমনই প্রকৃত বিরোধী দলের সংকট কাটাতে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। নিজেদের দাবি-দাওয়াসহ জনগণের স্বার্থের সকল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে হবে জাতীয় সংসদ। তাই একাদশ জাতীয় সংসদকে কার্যকর করে তুলতে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাচ্ছি।