চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জর্জ ফ্লয়েডের শেষকৃত্যে সব বর্ণের মানুষের জন্য সুবিচার দাবি

পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হওয়া আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিশ্বের সব বর্ণের মানুষের জন্য সুবিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন উপস্থিতরা।

টেক্সাস রাজ্যের হিউস্টনের গির্জায় জর্জ ফ্লয়েডের স্মরণে বক্তারা সদ্যপ্রয়াত ওই ব্যক্তিকে স্মরণ করে বলেন, ‘তার একমাত্র অপরাধ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়া।’

জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার সাথে জড়িত চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গির্জা থেকে গাড়িবহর তার মরদেহ হিউস্টন মেমোরিয়াল গার্ডেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মায়ের পাশে সমাধিস্থ হওয়ার কথা রয়েছে।

ফ্লয়েডের এক ভাগ্নি ব্রুক উইলিয়ামস আইনে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কৃষ্ণাঙ্গদের অসুবিধায় ফেলার জন্যই কিছু আইন তৈরি হয়েছে। আইন এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন আফ্রিকান-আমেরিকানদের সিস্টেম কাজ না করে। এই আইন পরিবর্তন করতে হবে। আর কোনো বিদ্বেষমূলক অপরাধ দেখতে চাই না।

এ বছরের নভেম্বরে হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে শোকবার্তা পাঠান।

তিনি বলেন, জর্জ ফ্লয়েডের জন্য বিচার যখন পাওয়া যাবে, তখনই সত্যিকার অর্থে আমেরিকা সব বর্ণের মানুষের সমান বিচার নিশ্চিত করার পথে এগিয়ে যাবে।

জর্জ ফ্লয়েড সম্পর্কে ‘জঘন্য’ মন্তব্য করার অভিযোগে এ সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেন জো বাইডেন।

তবে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বাইডেন কৃষ্ণাঙ্গদের শতভাগ সমর্থন পাবেন- এমন ধারণা থেকে কিছুদিন আগে এক মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তিনি বলেছিলেন, আফ্রিকান-আমেরিকানরা ‘কৃষ্ণাঙ্গই নয়’, যদি তারা ট্রাম্পকে ভোট দেয়।

শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হিউস্টনের ফাউন্টেন অব প্রেইস গির্জায় অনুষ্ঠিত শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও সেলিব্রেটিও ছিলেন সেখানে।

স্থানীয় ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আল গ্রিন মন্তব্য করেন, জর্জ ফ্লয়েডের একমাত্র অপরাধ ছিল যে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন।

নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বর্ষীয়ান অ্যাক্টিভিস্ট আল শার্পটন বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর যত জায়গায় যেসব মানুষ দাসদের দিয়ে কাজ করাতো, তাদের নাতি-নাতনিরা নিজেদের পিতামহদের মূর্তি ভেঙে ফেলছে।

ফ্লয়েডের স্মরণে তিনি বলেন, ঈশ্বর তাকে এমন একটি বিপ্লবের মধ্যমণির পদে আসীন করেছেন, যা সারাবিশ্বকে পরিবর্তন করবে।

অন্যদিকে মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ফ্লয়েডের শেষকৃত্যের স্মরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড নীরবতা পালন করতে অনুরোধ করেছেন।

গত মাসে একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা জর্জ ফ্লয়েডকে মাটির সাথে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রাখেন। এতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য মোবাইলে ধারন করা হয়। তারপর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয় পুরো দেশজুড়ে। সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অনেক দেশে।