পৃথিবীর জনসংখ্যার ব্যাপ্তিতে আসতে যাচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত চীনকে আগামী আট বছরের মধ্যে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে তার তিন ভাগের এক ভাগ আয়তনের দেশ ভারত।
জনসংখ্যা বিষয়ক প্রকাশিত নতুন তথ্যে এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে এবং ২০৬০ সালের দিকে তা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাবে। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের জনসংখ্যা ২১০০ সালের মধ্যে প্রায় ৩৭ কোটি ৫০ লাখে পৌঁছানোর পর কমতে শুরু করবে।
এখন যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রতি ৫ জনে ১ জন চীনা, সেখানে ২১০০ সালের মধ্যে তা হবে প্রতি ১০ জনে ১ জনেরও কম।
নতুন গবেষণার ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৯.৭ বিলিয়নে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আর ২১০০ সালের দিকে তা সর্বোচ্চ সীমা প্রায় ১১ বিলিয়নে ঠেকতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, এ সময়ের মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর বৃহত্তম ১০টি দেশের মধ্যে ব্রাজিল, বাংলাদেশ, রাশিয়া এবং মেক্সিকোর জায়গা নিয়ে নেবে যথাক্রমে ইথিওপিয়া, মিশর, কঙ্গো এবং তানজানিয়া। জনসংখ্যায় বর্তমানে তৃতীয় স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র নেমে যাবে চতুর্থ স্থানে। আর তার জায়গা নিয়ে নেবে নাইজেরিয়া।
গবেষণার তথ্যে বলা হয়েছে, আগামী ২০ বছরের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশগুলো তাদের জনসংখ্যা ধারণ ক্ষমতার শেষ সীমায় পৌঁছে যাবে। বিশ্বের প্রধান প্রধান অর্থনীতির দেশের বেশ কয়েকটিতে ইতোমধ্যে জনসংখ্যা কমতে শুরুও হয়ে গেছে।
বলা হয়েছে, ইউরোপ অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশের জনসংখ্যা ইতোমধ্যে কমে আসছে। জাতিসংঘের অনুমান, ২১০০ সালের মধ্যে ইউরোপের জনসংখ্যা ১২ কোটির মতো কমে বর্তমানের ৭৫ কোটি থেকে ৬৩ কোটিতে দাঁড়াবে। শুধু ইটালির জনসংখ্যাই ২ কোটি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এক্ষেত্রে ইউরোপীয় অঞ্চলের মধ্যে যুক্তরাজ্য সবচেয়ে বেশি ব্যতিক্রম। ২১০০ সালের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যা ১ কোটির মতো বাড়তে পারে। অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যাও বাড়বে বলে ধারণা।
জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয়ক উপ-মহাসচিব লিউ জেনমিনের মতে, মূলত সবচেয়ে দ্রুত লোকসংখ্যা বাড়ছে সেসব দেশের যেগুলো সবচেয়ে দরিদ্র।