‘রাবেয়া খাতুনের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে শুধু একজন লেখিকা বা সাহিত্যিককে আমরা হারাইনি, আমার কাছে মনে হচ্ছে জননী তুল্য এক মহীয়সী নারীকে হারালাম!’
চ্যানেল আইয়ে প্রখ্যাত রাবেয়া খাতুনের জানাজায় এসে এভাবেই স্মৃতিচারণ করলেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর।
তিনি বলেন, রাবেয়া খাতুনকে নিয়ে আমার বেশকিছু গান আছে। তার জন্মদিনে তপন বাগচীর কথায় সর্বশেষ একটি গান করেছিলাম। লুৎফর রহমান রিটনের কথাতেও একটি গান করেছিলাম রাবেয়া খাতুনকে নিয়ে। অনেকের কথায় তাকে নিয়ে আমি গান গেয়েছি। এই বিদায়বেলায় মনে পড়ছে সেই স্নিগ্ধ মায়ের রূপটিকে।
রাবেয়া খাতুনের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন ফকির আলমগীর। লেখনীর বাইরে তিনি মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন রাবেয়া খাতুনের দারুণ ব্যক্তিত্ব।
তার ভাষায়, অসাধারণ ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ ছিলেন রাবেয়া খাতুন। তিনি ছিলেন মমতাময়ী মায়ের রূপ। তার মতো এমন রুচিশীল আর সৃজনশীল মানুষ আমি কম দেখেছি। তিনি এমন একটি সময়ে লেখালেখি শুরু করেন, যখন মুসলিম সমাজে রক্ষণশীল একটি অবস্থা। সেই থেকে তার লেখনীর যে দ্যুতি তিনি ছড়িয়ে চলেছেন, সেই পথে আমরা বহুকাল ধরে এগিয়ে যাবো। এ আমার বিশ্বাস।
স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। রবিবার বিকালে বাধ্যর্কজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথাসহ চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতেও বিচরণ রাবেয়া খাতুনের। তার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘মেঘের পরে মেঘ’ জনপ্রিয় একটি চলচ্চিত্র। ‘মধুমতি’ এবং ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ও প্রশংসিত হয়েছে সব মহলে।
তার স্বামী প্রয়াত এটিএম ফজলুল হক ছিলেন দেশের চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রথম পত্রিকা সিনেমার সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক। বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’ এর পরিচালকও তিনি।
১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই এটিএম ফজলুল হক ও রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের চার সন্তানের মধ্যে রয়েছে ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।