সাধরণ মানুষ যখন নিজেই নিজেকে ঘরবন্দী রাখে বা ঘর থেকে বের হয় না, এমনকি কোনো অতিথি বাসায় এলে তাকে পুনরায় তার বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে নিজেকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে, তখন সেই ব্যবস্থাকে ‘জনতার কারফিউ’ বলে৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতবাসীদের রোববার জনতার কারফিউ পালনের আহ্বান জাননোর পর এই ইস্যুতে বিস্তর আলোচনা তৈরি হয় সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে গণমাধ্যমগুলোতে।
যদিও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনতার কারফিউয়ের সংবিধানিক অস্তিত্ব নেই, কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এবং এ বৈশ্বিক বাস্তবতায় মোদির জনতার কারফিউ পালনের ডাক বেশ সাড়া ফেলেছে ভারতসহ পুরো দুনিয়া জুড়ে।
ভারতের অন্যতম গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জনতার কারফিউয়ের একটি চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়েছে, যা এরই মধ্যে সোস্যাল মিডিয়ার ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
সংবাদপত্রটি আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্রের সংজ্ঞার আলোকে জনতার কারফিউকে বর্ণনা করেছে, ‘অ্যা কারফিউ অব দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল’-এভাবে।
ভারতে রোববারের জনতার কারফিউ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা হয়েছে। ভারত সরকার চায় দেশটির প্রতিটি মানুষকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে।
রোববার সকাল সাতটায় সাইরেন বাজিয়ে কারফিউয়ের শুরু হবে দেশটিতে। পুরো ‘ব্লাকআউট’ অর্থাৎ যুদ্ধ পরিস্থিতির আদল তৈরি করা হবে। যুদ্ধের সময় সাইরেন বাজিয়ে ব্লাকআউট পরিস্থিতি তৈরি করা হয় শত্রু পক্ষের বোমা হামলা থেকে জনগণকে সতর্ক করার স্বার্থে।
সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ ঘরে অবস্থান নেবে, যা চলবে পরবর্তি ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। এরপর বিকাল ৫টায় ভারতের সকল নাগরিক তাদের ঘর থেকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে-থালা বাসন পিটিয়ে কিংবা হাতে তালি দিয়ে জনতার কারফিউয়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে।
এর মধ্য দিয়ে মোদি সরকার বুঝে নিতে চাইছে করোনা ভাইরাস থেকে দেশের জনগণ নিজেদের রক্ষায় কতোটা সচেতন।
তবে জনতার কারফিউ চলাকালীন সময়ে জরুরি সেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বাইরে বের হতে পারবেন। আর যারা কর্মস্থলে না গিয়ে বাসায় অবস্থান করবেন তাদের পারিশ্রমিক যেনো কাটা না হয় সে বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা।