সৎভাবে দায়িত্ব পালন ও সাহসিকতার জন্য বরাবরই প্রশংসিত হয়ে এসেছেন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার। জঙ্গি তৎপরতা প্রতিহত করতে বারবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এছাড়া কক্সবাজারে কর্মরত থাকার সময় উপকূলের অনেক জলদস্যু আটকেও তার অবদান রয়েছে।
এই সাহসিকতাই কি তার পরিবারের জন্য কাল হলো?
বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম রোববার সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন। বাবুল আক্তারের মতো জনপ্রিয় একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে জঙ্গিবাদ নিধনে তার কর্মকাণ্ড কারণ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০০৯ সালের নগরীর টাইগার পাস এলাকায় এক সন্ত্রাসী ধরতে গিয়ে অস্ত্রের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রাণের ভয় না করে আসামীকে আটক করতে সফল হয়েছিলেন সেই সময়ের তরুণ সহকারী পুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তার। এ কারণে তিনি পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বা পিপিএম (সাহসিকতা) ২০০৯।
২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকারী তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন বাবুল। তদন্ত অনুসারে হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে আরাকানি নেতা আবু ছালেহকে গ্রেফতারে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
২০১৫ সালে অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার খোয়জনগর এলাকার একটি ভবনে জেএমবি আস্তানায় অভিযান চালাতে গিয়ে তিনি গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। এরপরও সেখান থেকে আটক করেন জেএমবি চট্টগ্রামের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ জাবেদকে। আস্তানা থেকে শক্তিশালী নয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, প্রায় ২শ’ রাউন্ড একে ২২ এর গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ছোরা, বিপুল পরিমান বোমা তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্র তৈরির মেশিন ও জিহাদী বই উদ্ধার হয়। এর আগে নগরীতে থেকে অভিযান চালিয়ে আটক করেন আরও চার জঙ্গিকে।
জঙ্গিবাদ ও অপরাধ দমনে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাবুল আক্তার পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পিপিএম (সেবা) (২০০৮), ২০০৯ পিপিএম (সাহসিকতা), ২০১০ সালে আইজিপি ব্যাজ, ২০১১ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদাশীল পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (সাহসিকতা)। বেসরকারি পর্যায়ে ২০১২ সালে সিঙ্গার-চ্যানেল আই (সাহসিকতা) পুরস্কার লাভ করেছেন বাবুল আক্তার। এর মধ্যে চারবার অর্জন করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের সেরা সহকারী পুলিশ সুপারের মর্যাদা।
সদ্য পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিও পেয়েছেন এসপি বাবুল আক্তার।