ভারতের পশ্চিবঙ্গের মধ্য কলকাতার একটি আবাসিক ফ্ল্যাটে গত ছয়মাস ধরে ঘটেছে এক অসম্ভব ঘটনা। ওই ফ্লাটে তিন জনের বসবাস ছিলো– অরবিন্দ (বাবা), পার্থ (ছেলে) এবং দেবযানী (মেয়ে)।
মঙ্গলবার রাতে রবিনসন স্ট্রিটের ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে পুলিশ গিয়ে ৭৭ বছর বয়সী অরবিন্দ’র অগ্নিদগ্ধ দেহ খুঁজে পায় বাথরুমে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অরবিন্দম মৃত্যুর সূত্র ধরে ছেলে পার্থকে জেরা করার এক পর্যায়ে বের হয়ে আসে অদ্ভুত কিছু ঘটনা। যেই ঘটনাগুলো সাধারণত ভূতের সিনেমা বা নাটকে দেখা যায়।
পার্থ পুলিশকে জানান, খাটের পাশে বেঞ্চে শোয়ানো আছে কম্বল ঢাকা একটি কঙ্কাল। দেখা যায় কঙ্কালটিকে শীতের পোশাক পরিয়ে রাখা হয়েছে। পাশে ছড়িয়ে আছে প্রচুর শুকনো ফল, পিৎজা, পাস্তা আর ভাত।
পুলিশ কঙ্কালটি দেখে জানতে চাইলেন এটি কার। পার্থ বললেন, আমার দিদির।
পার্থ বলেন, দিদির কঙ্কালের সঙ্গে তার পোষা কুকুরের কঙ্কালও রয়েছে। তিনি জানান, তার বড় বোন দেবযানী ডিসেম্বরে মারা গেছেন। আর তার আদরের পোষা কুকুরটি মারা গেছে আগস্টে।
‘কুকুরটা মারা যাওয়ার পর দিদি আর আমি কুকুরের মৃতদেহ রেখে দেই। তারপর কুকুরের শোকে দিদি একদম খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিলে ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। এরপর আমি আর বাবা দিদির মৃত দেহ আগলে রাখি। ছয়মাস ধরে দিদির কঙ্কাল নিয়ে আমি আর বাবা ঘুমাতাম,’ এভাবেই বিস্ময়কর তথ্য জানান পার্থ।
মঙ্গলবার রাতে রহস্যের জাল খুলে। বাথরুম থেকে অরবিন্দ’র দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে কঙ্কালের সন্ধান পায় পুলিশ।
পুলিশের সন্দেহ, বাবার মৃতদেহটিও ছেলে এভাবেই রেখে দিতো।
পুলিশ মনে করছে, গোটা পরিবার মানসিক বিকারগস্ত ছিলো।
পার্থ দে একটি নামী তথ্যপ্রযুক্তির সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু সাত বছর আগে তিনি চাকুরি ছেড়ে দেন। পুলিশ কঙ্কালগুলো ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।