চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ছেলেদের বিপক্ষে খেলে মেয়েদের রেকর্ডে তছনছ

‘শেষ তিন মাস আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমরা অনূর্ধ্ব-১৭, ১৯-এর ছেলেদের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছি। সেই প্রস্তুতিটা কাজে দিয়েছে। পেসারদের যেভাবে সামলেছি, সেটা ওখান থেকেই শিখেছি।’

কথাগুলো চামারি আতাপাত্তুর। শ্রীলঙ্কার নারী ক্রিকেট দলের টপঅর্ডার ব্যাটসওম্যান। মেয়েদের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৫ বছরের রেকর্ড ভাঙা অপরাজিত ১৭৮ রানের অসাধারণ ইনিংসটি খেলার পর সাফল্যের রহস্য এভাবেই সামনে তুলে আনলেন ‘নয়া’ আতাপাত্তু।

নতুন আতাপাত্তু বলার কারণ লঙ্কান ক্রিকেট আগেই একজন বিখ্যাত আতাপাত্তুকে পেয়েছে। তিনি মারভান আতাপাত্তু। এক সময়কার শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং ভরসা ব্যাট-প্যাড তুলে রেখেছেন অনেক আগেই। বৃহস্পতিবার থেকে তার নামটি আবারও সামনে চলে আসছে চামারি আতাপাত্তুর ইনিংসটির কারণে।

ব্রিস্টলে অস্ট্রেলিয়ার নারী দলের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। যার ১৭৮-ই এসেছে আতাপাত্তুর ব্যাটে। ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহটি সেখানে সিরিবর্ধনের ২৪ রান।

ইনিংসের চতুর্থ বলেই ক্রিজে এসেছিলেন আতাপাত্তু। কাঁধে ছিল শেষ পাঁচ ইনিংসে ১০, ০, ০, ১৫ ও ২৬ রানে সাজঘরে ফেরার বোঝা। কিন্তু ক্যারিয়ারের ঘুরে দাঁড়ানো ইনিংসটিতে মনেই হয়নি ভীষণ চাপে আছেন!

২৭ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৪৩ বলে। যাতে ২২টি চারের সঙ্গে আছে ৬টি ছয়ের মার। প্রথম ফিফটিতে পৌঁছাতে ৬১ বল খেলেছেন, ছিল ৮টি চার। আর ১০৬ বলে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে শতক। মেয়েদের ওয়ানডে ক্রিকেটেই যেটি তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের রেকর্ড।

মেয়েদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ওয়ানডে ইনিংসটি অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বেলিন্ডা ক্লার্কের। ১৯৯৭ বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ে ডেনমার্কের বিপক্ষে ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি। ভারতীয় দীপ্তি শর্মার ১৮৮ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চলতি বছরের শুরুর দিকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসটি খেলেছিলেন দীপ্তি।

ওয়ানডাউনে নেমে খেলা সেই ইনিংসটি দিয়েই ৩৫ বছরের একটি রেকর্ডও ভেঙেছেন আতাপাত্তু। মেয়েদের ক্রিকেটের এক ইনিংসে ব্যক্তিগত রানের শতাংশে এখন সবার ওপরে তার অপরাজিত সেঞ্চুরিটি। অর্থাৎ এক ইনিংসে একজনের অবদান ও বাকিদের অবদানের এই অনুপাত এর আগে দেখেনি নারী ওয়ানডে ক্রিকেট।

ঝড় তোলার পথে চামারি আতাপাত্তু

লঙ্কানদের সংগ্রহের ৬৯.২৬ শতাংশ রান এসে আতাপাত্তুর ব্যাটে। আগের রেকর্ডটি ছিল ইংল্যান্ডের লিনি থমাসের, ৬১.৯৪ শতাংশ। ১৯৮২ সালের সেই ম্যাচে ৭০ বলে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইংলিশ তারকা।

ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় যোগ করলেন, ‘আমি সাঙ্গার মত শুরু করেছি, জয়াসুরিয়ার মত শেষ।’ দুর্দান্ত ইনিংসটির পর প্রিয় ও আদর্শ মানা দুই ক্রিকেটারের নাম এভাবেই নিয়েছেন আতাপাত্তু।

পরে টুইট বার্তায় আতাপাত্তুকে অভিনন্দন ও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাঙ্গাকারাও। যদিও ইনিংসটি দেখা হয়নি তার। সেটি স্বীকার করে সময় পেলেই দেখার আগ্রহও পোষণ করেছেন।

আতাপাত্তুর স্বপ্নকে সেটি আরো বিস্তৃত করেছে। বিগব্যাশ ও ইংলিশ টি-টুয়েন্টি লিগে ডাক পাওয়ার আশা করছেন তিনি। পছন্দের ক্লাব হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থান্ডারের কথাও বলে ফেলেছেন।