ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে উইকেটের পেছনে অস্ট্রেলিয়ার অতন্দ্র প্রহরীর নাম এখন অ্যালেক্স ক্যারি। পেসারদের গোলার মত বলগুলো অবলীলায় তো ঠেকাচ্ছেনই, সেই সঙ্গে কঠিন সব ক্যাচ ধরে এরই মধ্যে হয়ে উঠেছেন বিশ্বকাপের অন্যতম উইকেটকিপারদের একজন। সঙ্গে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স তো আছেই। ব্যাটিংয়ের শেষদিকে রান বাড়াতে ক্যারিতেই ভরসা অজিদের।
অথচ এই ক্যারির ক্যারিয়ারটা কিন্তু গড়ে উঠতে পারতো ভিন্নভাবে। শুরুর ২০টা বছর শুধু অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলকেই ধ্যান-জ্ঞান করে বড় হয়েছেন। কিন্তু প্রত্যাখানের জ্বালায় জ্বলে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটেই থিতু হন।
স্কুলে থাকতে রুলস ফুটবল নিয়েই দিন কাটতো ক্যারির। অনেকটা দূর পর্যন্ত চলেও গিয়েছিলেন। ঘরোয়া লিগে ছিলেন নিয়মিত মুখ। ছিলেন স্কুল দলের অধিনায়কও।
কিন্তু জাতীয় দলের প্রত্যাখ্যানই খেপিয়ে দেয় ক্যারিকে। ফুটবল ছেড়ে এবার বেছে নেন ক্রিকেটকে। মাত্র ৭ বছর সময়। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হলেন, ফিল্ডিংয়ের সময় বেঁছে নিলেন উইকেটকিপিংকেই।
গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ক্যারি এখন পরিচিত এক মুখ। বিশেষত টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে। অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের হয়ে রীতিমত চোখে পড়ার মত পারফরম্যান্সই তাকে দিয়েছে বিশ্বকাপের টিকিট। ভারতের বিপক্ষে ২৫ বলের ফিফটি করা ক্যারিই এখন অজিদের হয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম অর্ধশতকের মালিক।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র ২৬ ওয়ানডে খেলেছেন ক্যারি। করেছেন ৬০২ রান। শেষদিকে বিস্ফোরক ইনিংস খেলার সামর্থ্য দেখে তার ভক্ত বনে গেছেন অজি গ্রেট স্টিভ ওয়াহ। ঠান্ডা মাথায় আগ্রাসী ইনিংস খেলার সামর্থ্য দেখে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ অজি অধিনায়ক ক্যারির মাঝে খুঁজে পেয়েছেন মাইকেল বেভান আর মাইক হাসির ছায়া।
‘অ্যালেক্স ক্যারি হল বেভান আর হাসির দারুণ মিশ্রন। সে ঠান্ডা মাথায় আগ্রাসী উদ্দেশ্য নিয়ে খেলতে পারে, পরিস্থিতি ভালো বুঝতে পারে আর শেষ ওভারগুলোতে প্রতিপক্ষ বোলিংকে ধুমড়েমুচড়ে দিতে পারে। সে দিন দিন নিজেকে একজন ম্যাচ বিজয়ী হিসেবে গড়ে তুলছে।’
ক্যারির খেলায় কেবল সাবেকরাই নন, মুগ্ধ সতীর্থরাও। এরইমধ্যে ক্যারিকে পাঁচ কিংবা ছয়ে এনে ব্যাটিং করানো যায় কিনা সেটা বিবেচনা করার জন্য কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে অনুরোধ করেছেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার।