আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য ছাত্রলীগকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
শনিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ নাসিম। এসময় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন: আগামী কয়েক মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনেক মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।
‘বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তিনি মুক্তির সংগ্রাম শেষ করতে পারেননি। ঘাতকের বুলেটের আঘাতে সে সংগ্রাম ব্যহত হয়। তাকে হারিয়ে এ জাতি দীর্ঘদিন ধরে অসহায় ছিলো। বর্তমানে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাঙালি জাতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সংগ্রাম পুনরায় শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সপ্নের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি’, বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু – এ তিনটি শব্দ একই সূত্রে গাঁথা। তিনি ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ন্যায়ের পক্ষে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তিনি সবসময় গরীব দুঃখী মানুষের পক্ষে কাজ করে গেছেন। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করার জন্যে তিনি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারই হননি, এজন্য তাকে কারাবরণও করতে হয়েছে। বায়ান্ন এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রত্যেকটি আন্দোলনে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আজ দেশে স্বাধীনতার ঘোষক কে, প্রথম রাষ্ট্রপতি কে এ নিয়ে বিতর্ক হয়।’
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন: এদেশের স্বাধীনতা টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে আসেনি। অনেক ত্যাগ, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যেই স্বাধীনতার ঘোষণা ছিলো। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়া জিয়াউর রহমানকে বিএনপি তার কৃতিত্ব বলে দাবি করে। এটি জাতির হিসেবে আমাদের জন্যে অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন: আপনারা এমন একটি দলে আছেন, যে দলে থাকার জন্য আপনাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। আপনাদের দলের নেত্রী এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে আদালতের রায়ে জেলে আছেন, দুর্নীতির দায়ে তার পুত্রদের বিদেশের আদালতে পর্যন্ত সাজা হয়েছে। এমন নেতাদের পেছনে থাকার জন্যে আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে হবে। এ নিয়ে বিএনপির উতলা হওয়ার কোনো দরকার নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন হবে। আপনাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স সহ অনেকে।
জাবিতে নানান আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মার্ষিকী ও শিশু দিবস পালিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৮ পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানার সভাপতিত্বে রাতে ১২ টা ১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে ক্যাফেটেরিয়ার লাউঞ্চে কেক কাটার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্বোধন করা হয়।
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মহিলা ক্লাব, অফিসার্স ক্লাবসহ অন্যান্য সংগঠন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯ টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১ টায় শোভাযাত্রা বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নেতৃতে বেড় করা শোভাযাত্রা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
নানা আয়োজনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপিত
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসউদযাপিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু’র ভাষ্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ সময় সাথে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিতদের সামনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী। বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের কথা উল্লেখ করে ড. এমরান বলেন “বঙ্গবন্ধু আজীবন শোষিতের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন। তিনি শোষিত শ্রেণীর জন্যই সর্বদা লড়ে গেছেন। এ দেশ তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ”। এসময় উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ড. মোঃ আবু তাহের, প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি (কার্যকরী) মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দীকি,সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়া উদ্দিন,শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সভাপতি এবং হল প্রভোস্টসহ অন্যান্য শিক্ষকও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।