মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ কন্যাশিশুটি জন্মের পাঁচদিনের মাথায় চোখ মেলেছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত এখনই সেটা বলা যাচ্ছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এই পৃথিবীর আলো দেখার আগে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা মায়ের গর্ভে থাকার সময়ই বুলেটের আঘাতে ছোট্ট মরিয়মের পিঠ-বুক এফোঁড়-ওফোঁড় হলেও বেঁচে আছে সে। জরুরি অস্ত্রোপচার করে তাকে ভূমিষ্ঠ করানোর পর আবার তার শরীরেও জরুরি অপারেশন করতে হয়।
এতো ধকল সইয়ে জন্মের পাঁচদিনের মাথায় চোখ মেলায় হাসপাতালে তার পাশে থাকা স্বজনরা আশা করছেন, শিশুটি হয়তো সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে।
চিকিৎসকরাও আশাবাদী বলে জানালেন শিশুটির ফুপু শিউলি বেগম।
তবে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ শিশুটি অপরিণত অবস্থায় বুকে মারাত্মক আঘাত ছাড়াও ডান চোখ এবং হাতে চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
‘মায়ের বুকের দুধও জোটেনি ওর,’ জানিয়ে শিউলি বেগম বলেন, গুলিতে আহত শিশুটির মা নাজমা বেগমের চিকিৎসা চলছে মাগুরার হাসপাতালে।
এ ক’দিন স্যালাইন চললেও এখন ডাক্তাররা বলছেন মায়ের দুধ খাওয়াতে। মা কাছে না থাকায় শিশুটির জন্য মায়ের দুধের ব্যবস্থা করা হবে বলে স্বজনদের আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শঙ্কা থাকলেও অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় শিউলি বেগম ভাতিজির নামও ঠিক করে ফেলেছেন। একটু ঝুঁকিমুক্ত হলেই বিবি মরিয়মের নামে ভাতিজির নাম ‘মরিয়ম’ রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাগুরা সদরের দুয়ারপাড়ায় যুবলীগের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এতে নিহত হন আব্দুল মোমিন ভূইয়া নামে শিশুটির এক আত্মীয়। আর মারাত্মক আহত হন অন্তঃসত্ত্বা নাজমা।
আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম গুলিতে মারাত্মক আহত হওয়ার পর মাগুরাতেই তার সিজার করে সন্তান ভূমিষ্ঠ করানো হয়। মায়ের জীবন বাঁচাতে অপরিণত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হওয়া মেয়েটিকে দু’দিন চিকিৎসা দেয়া হয় মাগুরাতেই। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা।
শিশুটির স্বজনরা দেশবাসীর কাছে মা ও মেয়ের জীবনের জন্য দোয়া চেয়েছেন।