কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর একটি স্মার্টফোন অ্যাপ এখন চীনে বিতর্ক ও আতঙ্কের বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অ্যাপটি দিয়ে ব্যবহারকারীরা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন চরিত্রের চেহারার জায়গায় নিজের চেহারা বসিয়ে নিতে পারেন।
ঝাও (Zao) নামের এই অ্যাপটি নিয়ে প্রথম আশঙ্কাই হলো গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং পরিচয় জালিয়াতির। কেননা, অ্যাপ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটি ফেসিয়াল রেকগনিশন ব্যবহার করে, এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ধোঁকা দিতে পারবে।
২৯ আগস্ট চীনে প্রকাশের পর থেকে চরম মাত্রার জনপ্রিয়তা পেয়েছে অ্যাপটি।
কিন্তু জনপ্রিয়তার সাথে সাথেই ছড়িয়ে পড়েছে সমালোচনা আর গোপনীয়তা-নিরাপত্তা নিয়ে ভয়। ঝাওয়ের ‘এন্ড-ইউজার এগ্রিমেন্ট’-এ বলা হয়েছে, এই অ্যাপ দিয়ে তোলা ছবিগুলোতে ব্যবহারকারীর নিজেরই কোনো অধিকার থাকবে না। অ্যাপটির ডেভেলপার কোম্পানি মোমো ইতোমধ্যে এজন্য ক্ষমা চাইতেও বাধ্য হয়েছে।
অন্যদিকে ফ্রি অ্যাপ ঝাও ভাইরাল হয়ে যাওয়ার কারণে এ নিয়ে আশঙ্কায় পড়েছে খোদ নির্মাতা কোম্পানি। তাদের বক্তব্য, বিপুল অর্থ ব্যয় করে তাদের কেনা সার্ভারের ধারণ ক্ষমতা খরচ করে ফেলছেন ব্যবহারকারীরা।
ঝাও একটি ‘ডিপফেক’ (Deepfake) জাতীয় অ্যাপ। অর্থাৎ এসব অ্যাপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ছবির সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করা হয় এবং সেটিতে পরিবর্তন এনে অন্য কোনো ছবি বা ভিডিওতে থাকা কোনো ব্যক্তির মুখের ওপর এমনভাবে স্থাপন করা হয়, যাতে মনে হয় ছবি বা ভিডিওটিতে ব্যবহারকারী ব্যক্তিই উপস্থিত।
এর ফলে নিরাপত্তা রক্ষার্থে লক-আনলক ব্যবস্থা বা আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত ফেস রেকগনিশন সিস্টেমেও এই ভুয়া চেহারা ব্যবহার করে জালিয়াতি করতে চোর-বাটপাররা সফল হতে পারে, এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে এটি অসম্ভব বলে আপাতত আশ্বস্ত করেছে চীনের ওয়েব জায়ান্ট আলীবাবার অঙ্গসংগঠন আলীপে। অনলাইনে মূল্য পরিশোধ এবং অর্থ লেনদেনে বিশ্বের বৃহত্তম এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ঝাও বা এ জাতীয় ডিপফেক অ্যাপ দিয়ে তৈরি ভিডিও অথবা ছবি দিয়ে তাদের ‘স্মাইল টু পে’ ফেসিয়াল রেকগনিশন সিস্টেমকে ধোঁকা দেয়া যাবে না।