চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে টাকার কোনো অভাব নেইঃ অর্থমন্ত্রী

করোনা ভাইরাসের কারণে চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনতে টাকার কোনো অভাব নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের (জেসি) ১৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা করোনাভাইরাসের কারণে চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনকে প্রশ্ন করেন। এর জবাবে তিনি বলেছ্নে, ‘যেসব বাবা-মা সন্তানদের ফিরিয়ে আনতে যোগাযোগ করেছেন, তাদের নিজ উদ্যোগে দেশে আনার জন্য বলা হয়েছে। আমরা এখনও ফ্লাইট ক্যানসেল করিনি। বিশেষ করে কুনিমং এবং গুয়াংজু থেকে চায়নিজ ফ্লাইট আসছে। আমরা যাদের এনেছি, তাদের জন্য তিন কোটি টাকা প্লেন ভাড়া দিতে হয়েছে। আমার ফান্ডে আর কোনো পয়সা নেই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকার অভাব আমাদের নেই। অভাব থাকার কথাও নয়। সুতরাং এখানে হয়তো একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অন্য কারণে চীন থেকে বাংলাদেশিদের এ মুহূর্তে সরকারিভাবে দেশে ফেরানো হচ্ছে না।

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘টাকার অভাবের কথা তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কখনও বলেননি। তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) এটা বুঝাতে চাননি। তিনি যেটা বলতে চেয়েছেন, প্রথমেই ৩শ’র বেশি লোককে আমরা গিয়ে নিয়ে আসলাম। সেখানে টাকার ব্যাপারটা ছিল না। কিন্তু চীনের উহানে ক্যাপ্টেন, ক্রুরা যারা বিমানে করে গেলেন, তাদের এখন আর কোথাও যেতে দিচ্ছে না। এমনকি এয়ারক্রাফটগুলোকেও আর কোথাও যেতে দিচ্ছে না। এভাবে বন্ধ হয়ে গেলে তো আমরা কাজ করতে পারব না। সেজন্য আমরা একটু সময় নিচ্ছি। টাকার অভাব- এসব কোনো ব্যাপার নয়।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা চীন থেকে এসেছেন, তারা এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে যেতে পারছেন না। ক্যাপ্টেন, ক্রু তারা সবাই যেন জেলে বাস করছেন।

এর আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ সৌদি আরব যৌথ কমিশনের প্রতিনিধি দল।

ওই সময় বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গত অর্ধ শতাব্দীতে বন্ধুত্বে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বন্ধুত্বের উর্ধ্বে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর অংশীদারিত্বকে’ ধরে রাখার দিকে নজর দিচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান, দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও শিল্প, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতসহ ধর্ম বিষয়ক খাতে সৌদি আরবের বিশাল বিনিয়োগ আসছে।

বাংলাদেশের বিমেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সৌদিকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এসব অঞ্চলের প্রচুর বিদ্যুৎ সরবরাহের দরকার। সৌদির আরামকো কোম্পানি বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পরে দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই পারস্পরিক চুক্তির ভিত্তিতে একটি যৌথ কমিশন (জেসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানানি তিনি।

সৌদি আরবে দক্ষ জনশক্তি পাঠানো প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় দক্ষ জনশক্তি পাঠাচ্ছে। একইভাবে সৌদি আরবেও দক্ষ জনশক্তি পাঠানো হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, সৌদির শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মাহির আব্দুল রাহমান গাসিম, আরামকোর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার এক্সপার্ট জুলিও সি হেজেলমেয়ার মোসেস প্রমুখ।