গত কয়েক মাসে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর চিকুনগুনিয়া এখনও রাজধানীবাসীর কাছে এক আতঙ্কের নাম। রাজধানীর ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তদের প্রায় ৪০ শতাংশ সুস্থ হওয়ার পর ব্যাথার কারণে আবারও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এছাড়া নতুন করে এখনও নিয়মিত অনেক মানুষের এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে শুরু থেকেই চিকিৎসকরা বলছেন, এডিস মশার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। কিন্তু এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কিছু পদক্ষেপ দেখা গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। তাই ভুক্তভোগী মানুষের স্বার্থে বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্তও গড়িয়েছে। চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করার পরও বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে বড় কোন কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। আর এতে সাধারণ মানুষকেই বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। নগরবাসী মনে করছেন, দীর্ঘদিন বর্জ্য পরিষ্কার না করায় ড্রেনগুলোই বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলার মানসিকতা তো গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে রয়েছেই। চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, এমন অবস্থায় সিটি কর্পোরেশনের আশায় না থেকে রাজধানীর পুরান ঢাকার সুবল দাস রোডের এক বাড়ির মালিক নিজেই ড্রেন পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। সীমিত সরকারি উদ্যোগের বিপরীতে এমন ব্যক্তিগত উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এছাড়া চিকুনগুনিয়ার এই ভয়াবহ প্রকোপ প্রমাণ করে সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ সম্ভব নয়। তাই পুরান ঢাকার ওই বাড়ির মালিকের মতো সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে আমরা মনে করি, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপের এই সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রায় ৫ হাজার এবং উত্তরের প্রায় ২৫’শ পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সারাদেশের পৌর শহরগুলোর ময়লা অপসারণে সংশ্লিষ্ট জনবলকে বিশেষভাবে কাজে লাগাতে হবে। এর পাশাপাশি এই জ্বর প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ সম্ভব বলে আমরা মনে করি।