চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মানুষ যুগের পর যুগ যে অভিযোগ করে আসছেন, তা সমাধানে প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের অংশ হিসেবে শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন: ‘চিকিৎসকদের জন্য দু’বছর ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে এক বছর থাকতে হবে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে। প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করে চিকিৎসকদের হাসপাতালে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন: ‘কেন কোনো এলাকার হাসপাতালে ডাক্তার থাকছেন না? তা সব জেলায় জরিপ চালিয়ে বের করতে হবে। যারা সেবা দেবেন না, তাদের ওএসডি করে রাখতে হবে। কারণ, চিকিৎসকদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে চাকরি থেকে চলে যেতে হবে তাদের। নার্সরা রোগীর সেবা না করলে চাকুরি থেকে অব্যাহতি নিন।’
প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কারণ, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কঠোর হওয়ার বিকল্প সরকারের নেই। তবে চিকিৎসকদের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে উপজেলা পর্যায়ে তাদের জন্য আরও সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে বলেও আমরা মনে করি।
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সেবা না দেওয়ার অভিযোগ যেমন আছে, ঠিক তেমনই উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে নানা ধরণের সংকটও রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও লোকবলের অভাবই হাসপাতালগুলোর প্রধান সংকট। এদিকেও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা নজর দেবেন বলে আমরা আশা করি।
চিকিৎসকরা মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে এ পেশায় আসেন। তাই তাদেরকে সবসময় সাধারণ মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার মানসিকতা লালন করতে হবে। অবশ্য এই মানসিকতা তাদের রয়েছে বলেও আমরা মনে করি। কারণ, তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও বেশিরভাগ চিকিৎসকদের ওপর এখনও সাধারণ মানুষের আস্থা উঠে যায়নি। বরং নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসেবায় তাদের বেশিরভাগের অবদান প্রশংসনীয়।
প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগে তাদের সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের আশাবাদ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে এবং তা সবসময় অব্যাহত রাখতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।