দুই বাঁহাতি স্পিনারের সঙ্গে দুই অফস্পিনার। চার স্পিনার নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের ঘূর্ণিফাঁদে পৌনে তিন দিনে টেস্ট জিততে টাইগার স্পিনারদের ছিল দুর্দান্ত ভূমিকা। ক্যারিবীয়দের ২০ উইকেটই ঝটপট তুলে নেন স্পিন-চতুষ্টয়।
তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ লম্বা সময় ধরেই বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে নিয়মিত। চোট কাটিয়ে উইন্ডিজ সিরিজে ফিরেছেন ভরসা সাকিব আল হাসানও। নতুন যোগ হয়েছেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। এই চার স্পিনার মিলে সমন্বিত আক্রমণ সাকিবের কাছে উপভোগ্য ও রোমাঞ্চকর।
উপভোগের পিঠে আছে একটি আক্ষেপও। মিরপুরে শুক্রবার দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগের দিন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে লেগস্পিনার না থাকা নিয়ে সেই আক্ষেপের প্রসঙ্গও উঠে এলো। উত্তরে অধিনায়ক সাকিব জানালেন, ভালো মানের একজন লেগি এলে পাল্টে যেতে পারত বাংলাদেশের টেস্ট খেলার কৌশলটাই।
‘বৈচিত্র্য যত বেশি থাকে তত ভালো। স্বাভাবিকভাবে এখানে যদি একটা লেগস্পিনার থাকে তাহলে বৈচিত্র্য বেশি। ওই একটা জায়গাতে (লেগি) প্রয়োজনীয়তাটা অনেকবেশি। লেগস্পিনার থাকলে মনে হয় আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা একটু সহজ হয়। কারণ তখন উইকেটগুলো আমরা আরেকটু ব্যাটিং-ফ্রেন্ডলি করতে পারব। লেগস্পিনারদের জন্য উইকেটে খুব বেশি সহায়তা না থাকলেও উইকেট নিতে পারে। তখন আমরা হয়তো আরও ভালো পরিকল্পনা করতে পারব।’
‘এখন যেটা হচ্ছে, বোলার-ফ্রেন্ডলি উইকেট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে স্পিনারদের জন্যে। আর ফিঙ্গার স্পিনার ও রিস্ট স্পিনারদের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। রিস্ট স্পিনাররা রান একটু বেশি দিতে পারে, কিন্তু তারা অ্যাটাকিং একটা অপশন। উইকেট যদি ভালো হয়, ব্যাটসম্যান ফ্রেন্ডলি হয়, তাহলে ফিঙ্গার স্পিনাররা অতবেশি কার্যকরী হয় না। তখন লেগ স্পিনাররা বেশি কার্যকরী হয়। যদি বৈচিত্র্যগুলো ওরকম থাকে তাহলে আমরা ভিন্ন ধাঁচে পরিকল্পনা করতে পারব। প্রতিপক্ষের শক্তি বুঝে পরিকল্পনা করার সুযোগ পাব। অনেকবেশি অপশন থাকবে। এখন যেটা নেই। রিস্ট স্পিনার আসলে অপশন তৈরি হবে বলে মনে করি।’
বাংলাদেশে লেগস্পিনারদের মধ্যে আক্ষেপ হয়ে আছে জুবায়ের হোসেন লিখনের নাম। ২০১৪ সালে উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়েই শুরু করেছিলেন এ তরুণ। ৬ টেস্টে ১৬ উইকেটে থমকে আছে তার ক্যারিয়ার। এখন ঘরোয়া লিগেই খেলার সুযোগ হয় না তার!
লিখনের পর এসেছেন তানবীর হায়দার। দুই ওয়ানডে খেলেই ছিটকে গেছেন জাতীয় দল থেকে। আশার বাতি হয়ে অবশ্য জ্বলছে একটি নাম, রিশাদ হোসেন। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার ১৬ বছর বয়সী এ কিশোরের মাঝে সম্ভাবনা দেখছেন সকলে। রিশাদ বিসিবির বিভিন্ন দলে খেলার সুযোগও পাচ্ছেন নিয়মিত। বাংলাদেশ অধিনায়কের হাহাকারটা শুনে তিনি নিজেকে পূর্ণ-প্রস্তুত করতে পারলেই এখন ষোলোকলা পূর্ণ হয়!