হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামি আব্দুল আলী ও জুয়েল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল জজ কাওসার আলমের আদালতে তাদের তোলা হলে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিই একই এলাকার বাসিন্দা।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে গত শুক্রবার নিখোঁজ হওয়া চার শিশু শুভ, মনির, তাজেল ও ইসমাইলের মরদেহ বুধবার উদ্ধারের পর রাতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আব্দুল আলী ও জুয়েল মিয়াকে আটক করা হয়।
এরপর আজ সকালে হাবিবুর রহমান আরজু ও রুবেল মিয়া নামে আরো দু’জনকে আটক করে পুলিশ।
শুক্রবার বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়ার পর সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র জাকারিয়া শুভ (৮), প্রথম শ্রেণীর মনির মিয়া (৭), চতুর্থ শ্রেণীর তাজেল মিয়া (১০) এবং সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাইল মিয়া (১০) নিখোঁজ হয়ে যায়।
নিখোঁজের পাঁচদিন পর বুধবার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি এলাকায় কুমারপাড়া ইছার বিল পাড়ের কয়েকটি গর্ত থেকে উদ্ধার হয় তাদের মৃতদেহ। শিশুদের মধ্যে তিনজন সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই।
মৃতদেহ উদ্ধারের পর তদন্তে নামে র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হত্যাকারীদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। বুধবার রাতেই সীমান্ত এলাকা রশীদপুর থেকে আব্দুল আলী ও তার ছেলে জুয়েলকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। ভোরে বাহুবলের চা বাগান এলাকা থেকে আরো আটক করা হয় আব্দুল আলীর অন্য ছেলে রুবেলকে। ওই সময়ই আটক করা হয় আরজুকে।
হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. দেবপ্রিয় জানিয়েছেন, শিশুদের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার কোনো এক সময় ওই শিশুদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
এ ধরনের নিষ্ঠুরতার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা না গেলেও স্থানীয়দের ধারণা, গ্রামের পঞ্চায়েত নিয়ে বিরোধ থেকে ওই হত্যকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
বুধবার রাতে চার শিশুর নামাজে জানাযা শেষে তাদের গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়।