দীর্ঘ ৩৮ বছরে এই প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ পুরো নর্থ আমেরিকাকে দিনের বেলাই ঢেকে দিলো রাতের আঁধারে। ১৯৭৯ সালের পর এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আর একটাও পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়নি।
শুধু তাই নয়, ৩৮ বছরে এই প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখল আমেরিকার নিচের দিকের ৪৮টি অঙ্গরাজ্য।
পশ্চিমের অরিগন অঙ্গরাজ্য থেকে পূর্বের সাউথ ক্যারোলাইনা – সূর্যের ওপর চাঁদের বিশাল ছায়া এসে ঢেকে দিয়েছিল এই পুরো এলাকা। যুক্তরাষ্ট্রের লাখোকোটি মানুষ আগেই জড়ো হয়েছিল সেই এলাকাগুলোতে, যেখানে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাকি অঞ্চলগুলোতে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে। আংশিক গ্রহণ দেখেছে আশপাশের দেশগুলোও। পূর্ণগ্রাস এলাকার বাইরে পুরো নর্থ আমেরিকা জুড়ে, কানাডিয়ান আর্কটিক এবং সাউথ আমেরিকার উত্তরাঞ্চল পেরিয়ে বলিভিয়া আংশিক সূর্যগ্রহণ অবলোকন করেছে।
অরিগনের স্থানীয় সময় সকাল ১০.১৬ মিনিটে গ্রহণ শুরু হয়। পূর্ণগ্রাস গ্রহণ (সূর্য চাঁদের পেছনে পুরোপুরি আড়াল হয়ে শুধু সোনালি বলয় দেখা যাওয়া) স্থায়ী ছিল মোটামুটি দু’মিনিট। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিটের গ্রহণ প্রক্রিয়ার নানা পর্যায় মুগ্ধ হয়ে দেখেছে দর্শণার্থীরা।
দৈর্ঘ্যের হিসেবে ৭০ মাইল লম্বা এলাকা, অর্থাৎ অরিগন থেকে গ্রহণের ছায়া এগোতে এগোতে আইডাহো, মনটানা, ওয়াইয়োমিং, নেব্রাস্কা, কানসাস, আইওয়া, মিসৌরি, ইলিনয়, কেন্টাকি, টেনেসি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং সবশেষে সাউথ ক্যারোলাইনাকে গ্রাস করে।
তবে অন্যান্য এলাকার চেয়ে ইলিনয়ের কার্বনডেল শহরে ভীড় ছিল সবচেয়ে বেশি। সোমবার হওয়া গ্রহণের যাত্রাপথের মোটামুটি মাঝামাঝি অবস্থানে থাকায় সেখানে পূর্ণগ্রাসের স্থায়ীত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি, প্রায় ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ড।
আটলান্টিক উপকূলীয় শহর চার্লসটনই সবশেষে বিদায় জানিয়েছে এবারের সূর্যগ্রহণকে। সমুদ্র সৈকতে বসে সেখানে অসংখ্য মানুষ গ্রহণ উপভোগ করেছে। চার্লসটনে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ শুরু হয়েছিল সবার পরে, স্থানীয় সময় দুপুর ২.৪৮ মিনিটে।
বিবিসি’র ছোট্ট ভিডিওতে দেখুন গ্রহণের ‘ডায়মন্ড রিং’ বা হীরের আংটির আকার ধারণের ইফেক্ট:
(ছবি: দীপেন ভট্টাচার্য; গ্রহণের যাত্রাপথের ম্যাপ: নাসা/বিবিসি)