রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে ঋণ চুক্তি হচ্ছে এ সপ্তাহেই।
আগামী ২৬ জুলাই এ চুক্তি হবে। যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে
বড় ঋণ। একবছরের বাজেটের তিনভাগের একভাগ অর্থের সমান। রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া এ ঋণ গতকাল সোমবার অনুমোদন করেছে দেশটির সরকার।
এ ঋণ চুক্তি করতে বৃহষ্পতিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়া যাবেন।
এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। অর্থাৎ মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ জন্য নেয়া হচ্ছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বা এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যর প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ইআরডি সচিব মেজবাহ উদ্দীন, অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।
গত ২৭শে জুন এই ঋণচুক্তির খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা কমিটি। এর আগে গত ২১শে জুন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে এ কেন্দ্র স্থাপনের জায়গার জন্য লাইসেন্স দেয়।
ঋণ নেয়ার ১০ বছর পর এর সুদ শুরু হবে। ৩০ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে পুরো টাকা। মূল ঋণের প্রথম কিস্তি ২০২৭ সালের ১৫ই মার্চ দিতে হবে। প্রতি বছরের ১৫ই মার্চ ও ১৫ই সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ শোধ করতে হবে। মূল অর্থের সাথে এক দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হবে। তবে সুদের হার বছরে চার শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
এর আগে এই কেন্দ্রর প্রাথমিক পর্যায়ের কাজের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ নেয়া হয় রাশিয়ার কাছ থেকে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রর মেয়াদ ৫০ বছর। তবে ৯০ বছর একটানা একই হারে চলতে থাকবে। বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রর প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা। কেন্দ্রটি পরিচালনা করবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ’।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম পর্যায়ের কাজ আগামী ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এরপর পরমাণু চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হবে। এরইমধ্যে কেন্দ্রটির নকশা তৈরির কাজ শেষ করেছে এটমস্ট্রয় এক্সপার্ট।
নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। কেন্দ্রের বর্জ্য রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে।