চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ লগ্নে দাঁড়িয়ে। ফাইনালে লিভারপুল বনাম টটেনহ্যাম। এ মৌসুমের দীর্ঘ পথচলায় এমন অনেক ম্যাচ হয়েছে যা রীতিমতো নাটকীয় বা দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প বলা যেতে পারে। ইউরোপ সেরার ইতিহাসে আর কোনো মৌসুমে এতোগুলো কামব্যাকের ম্যাচ দেখা যায়নি।
লিভারপুল-বার্সেলোনা (সেমিফাইনাল)
প্রথমপর্বে ঘরের মাঠে মেসির ম্যাজিক ফ্রি-কিকে তিন গোলের ব্যবধানে জয় পায় বার্সেলোনা। সেই ম্যাচে বেশ নজরকাড়ে লিভারপুল। কিন্তু গোলের খাতা সেদিন খুলতে পারেনি। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে লিভারপুলের পক্ষে সম্ভব ছিল না ঘরের মাঠে ওই ব্যবধান কমিয়ে ফাইনালে যাওয়ার। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে প্রথম থেকেই ফুল ফোঁটাতে শুরু করে অলরেডরা। দেখে মনে হয়নি সালাহ, ফিরমিনোরা অনুপস্থিত ছিলেন ম্যাচে। উল্টোদিকে তেমনই ফ্লপ ছিলেন মেসি-সুয়ারেজরা। বাকিটা ইতিহাস।
টটেনহ্যাম-আয়াক্স (সেমিফাইনাল)
প্রথম লেগে ঘরের মাঠে আয়াক্সের বিরুদ্ধে হেরে যায় লন্ডনের ক্লাবটি। বিপক্ষে থাকা আয়াক্স চলতি মৌসুমে আলোড়ন ফেলে দেয়া দল। রিয়াল মাদ্রিদ এবং জুভেন্টাসকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়ে এতদূর এসেছে। ফলে ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে তারা দাপিয়ে শুরু করবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক। তেমনই হয়, প্রথমার্ধে দুই গোল করে ফেলে ডাচ দলটি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে পুরো চিত্রবদল। টটেনহ্যাম জার্সিতে অতিরিক্ত সময়ে নিজের হ্যাটট্রিক সেরে অ্যাওয়ে গোলের বিচারে দলকে ফাইনাল নিয়ে যান ব্রাজিলিয়ান লুকাস মৌরা।
ম্যানইউ-পিএসজি (শেষ ১৬)
চলতি বছর বেশ টালমাতাল অবস্থায় কেটেছে ম্যানইউর। হোসে মরিনহোকে সরিয়ে কোচ করা হয় ওলে গানারকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচে তাদের সামনে ছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে দু’গোলে হেরে যায় ম্যানইউ। অনেকেই ভেবেছিল ম্যানইউর পক্ষে আর সম্ভব নয় পরের রাউন্ডে যাওয়া। কিন্তু বাইরের মাঠে অনেক উজ্জ্বল ছিল ম্যানইউ। অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি পায় রেড ডেভিলরা। গোল করে দলকে পরবর্তী রাউন্ডে নিয়ে যান মার্কাস র্যাশফোর্ড।
জুভেন্টাস-অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (শেষ ১৬)
প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে দাপট থাকলেও, গোল ছিল না রোনালদোর। অন্যদিকে চাপে রাখলেও গোল পাচ্ছিল না অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে দু’গোলের ব্যবধানে অনেকটাই এগিয়ে থাকে সিমিওনের দল। চাপ বেড়ে যায় জুভেন্টাসের। তবে দলে যখন রোনালদোর মতো খেলোয়াড় থাকেন, তখন চিন্তা কিসের? তুরিনে ঘরের মাঠে রোনালদোর হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অ্যাটলেটিকো। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে নিজের অষ্টম হ্যাটট্রিক করেন সিআর সেভেন।
আয়াক্স-রিয়াল মাদ্রিদ (শেষ ১৬)
টুর্নামেন্টের শুরুতে আয়াক্সকে নিয়ে বাজি ধরার মতো তেমন কিছু ছিল না। পুরো দলটাই তরুণ। সেই তরুণরাই পরে বাজিমাত করে। রিয়ালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথম লেগে হেরে যায় আয়াক্স। ফলে দ্বিতীয় লেগে রিয়ালের মাঠে আয়াক্স দাপিয়ে খেলবে তেমনটা ভাবেননি বিশ্লেষকরা। কিন্তু হয়েছে সেটাই। শুরু থেকে চাপ বাড়িয়ে গোল পেয়ে যায় আয়াক্স। শেষদিকে রিয়াল চাপ তৈরি করে গোল পেলেও, দু’লেগ মিলিয়ে পরের রাউন্ডে চলে যায় ডাচ দলটি।