বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় বিতর্কিত সামরিক তৎপরতায় সৌদি আরবের রাজপরিবার নজীরবিহীন সংকটের মুখে পড়েছে বলে মনে করেন মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল লাজারে।
অনুসন্ধানী সংবাদের নিরপেক্ষ উৎস হিসেবে পরিচিত ‘কনসোর্টিয়ামনিউজ’ এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে সৌদি রাজতন্ত্রের বেহালদশা নিয়ে লিখতে গিয়ে সৌদি অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির সংকটের কথা তুলে ধরেছেন এই মার্কিন সাংবাদিক।
তেল নির্ভর অর্থনীতি:
ড্যানিয়েল লাজারের মতে সৌদি আরব অর্থনৈতিকখাতে বৈচিত্র না এনে শুধুমাত্র তেল কেন্দ্রীক অর্থনীতিতে অভ্যস্ত। গত কয়েকবছরে সৌদির তেল নির্ভর অর্থনীতি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই নির্ভরতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা গত ৪০ বছরের রেকর্ডকেও হার মানিয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমায় চরমমূল্য দিতে হচ্ছে গোটা সৌদিকে।
বিতর্কিত পররাষ্ট্রনীতি:
নড়বড়ে অর্থনীতিতেও মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া পররাষ্ট্রনীতির জন্য সৌদি বাদশা সালমান ও তার ছেলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করেছেন ড্যানিয়েল লাজারে। সৌদি প্রিন্সকে ‘ উগ্র সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণতার শিক্ষায় বেড়ে ওঠা একজন’ বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি।
এই সাংবাদিকের মতে, তেল কেন্দ্রীক চিন্তা-চেতনা থেকে আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীকে পরোক্ষ মদদ দিচ্ছে সৌদিরা। তবে ইয়েমেন ও সিরিয়ায় সৌদি পররাষ্ট্রনীতির পেছনে ‘ইরান’ আরেকটি বড় কারণ। ইরানকে শায়েস্তা করতে ইয়েমেনে হুথিদের ওপর আগ্রাসন ও সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নুসরা ফ্রন্ট বিদ্রোহীদের ব্যবহার করছে সৌদি আরব।
সাম্প্রতিক সময়ে আইএসের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ব্যর্থতায় রাশিয়া হস্তক্ষেপ করায় সৌদির উদ্দেশ্য অনেকখানি ভেস্তে গেছে বলেও মনে করেন লাজারে। দম্ভ চূর্ণ হলেও আধিপত্য বজায় রাখতে মরিয়া সৌদি রাজপরিবার এখন সিরিয় বিদ্রোহীদের হাতে আরও বেশি অর্থ-অস্ত্র তুলে দিচ্ছে।
সবদিক বিবেচনায় ড্যানিয়েল লাজারে সৌদি আরবকে ‘পারস্য-উপসাগরীয় অঞ্চলের অসুস্থ রাষ্ট্র’ বলে মন্তব্য করেন।