চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের ঠিক আগ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া ভারতের দ্বিতীয় মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর অবস্থান জানতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- ইসরো প্রধান ড. কে. সিভান।
চন্দ্রযানটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান কে সিভান। রোববার ভারতের সংবাদ মাধ্যম এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
মহাকাশযানটির নেতৃত্বদানকারী ড. কে সিভান বলেন: অবতরণের কিছু আগে হারিয়ে যাওয়া চন্দ্রযানটির সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। হারিয়ে যাওয়া ওই চন্দযানটির সঙ্গে পুরাপুরি যোগাযোগ স্থাপনে আগামী দুই সপ্তাহ চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
শনিবার সকালে চন্দ্রযান-২ বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার ওপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। চন্দ্রযানটি প্রতি সেকেন্ডে ৬০ মিটার বেগে ভ্রমণ করছিলো। নামার সময় চন্দ্রযানটির গতি ছিলো প্রতি সেকেন্ডে ৪৮ মিটার। এটা পরিষ্কার যে, যে গতিতে যানটি নামছিলো তাতে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় লাগতো।
চাঁদে ভারতের দ্বিতীয় মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিলো। অবতরণের মাত্র ২.১ কিলোমিটার আগে মহাকাশযানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমে আশঙ্কা করা হয় মহাকাশযানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হয়েছে। মহাকাশযানটির পাঠানো তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা।
ইসরোর প্রশংসা করে দেয়া এক টুইট বার্তায় নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের জন্য ইসরো যে প্রচেষ্টা দেখিয়েছে তা বিশ্বের কাছে প্রশংসনীয়। স্পেস অনেক কঠিন। মহাকাশ নিয়ে গবেষণার জন্য এ পদক্ষেপ ইসরোর সাথে কাজ করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। আমরা আগেই বলেছিলাম চন্দ্রযান-২ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবস্থানের কথা। ইসরোর মহাকাশ নিয়ে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণায় এক সঙ্গে কাজ করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।”
চন্দ্রযান-২ এর উৎক্ষেপণ হয়েছিল গত ২২ জুলাই। মহাকাশযানটির ইঞ্জিন অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী হওয়ায় এটি কয়েক সপ্তাহ পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে গতি সঞ্চয় করেছিল। ২২ দিন পর পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চন্দ্রযান-২ চাঁদের দিকে রওনা হয়।
চন্দ্রযান-২ এর উদ্দেশ্য ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো এবং পানির সন্ধান করা। এর আগে, মহাকাশযান পাঠালেও, সেটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পরিকল্পনা ছিল না।
চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার ও রোবটযানের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও মহাকাশযানের বাকি অংশটি সচল অবস্থায় চাঁদের কক্ষপথে আছে, যা প্রতিনিয়ত তথ্য দিয়ে চলেছে।