রান্নাঘরে নোংরা পরিবেশ, ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংসের সাথে ভাত ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য রাখায় এবং নিজেদের তৈরি দইয়ে মেয়াদ না দেয়ায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার বালুচরা বাজারের জামান হোটেলকে।
এছাড়া নগরির বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে মোট ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যৌথভাবে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ ও কোতয়ালী থানার অধীন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেছে।
জরিমানার পাশাপাশি ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা ও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম জেলার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে নিয়মিত তদারকির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টা থেকে বায়েজিদ ও কোতয়ালি থানার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ৭ প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় মোট ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা ছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য, শিশু খাদ্য ও ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
বায়েজিদ থানার অক্সিজেন মোড় বাজার, বালুচরা বাজার ও কোতয়ালী থানার রিয়াজ উদ্দীন বাজারে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের মূল্য তালিকা এবং পণ্য ক্রয় রশিদ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ব্যবসায়ীদেরকে নিত্যপণ্যের মূল্যতালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে ও পণ্য ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ করতে অনুরোধ করা হয়।
চট্টগ্রামের বৃহত্তম পাইকারি আলুর বাজার, রিয়াজউদ্দীন বাজার পরিদর্শনের সময় রাজমহল বাণিজ্যালয়কে মূল্য তালিকায় ২৫ টাকা উল্লেখ করে ৩৬ টাকায় আলু বিক্রয় করায় ১০ টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়। বাগদাদ বাণিজ্যালয়কে মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করায় ও সাড়ে ৩৭ টাকায় আলু বিক্রয় করায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে অন্যান্য পাইকারি ব্যবসায়িদেরকে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রয় করেত সতর্ক ও অনুরোধ করা হয়।
বায়েজিদ থানার অক্সিজেন মোড়ের চিটাগাং স্টোরকে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু খাদ্য ও কোমলপানীয় ধ্বংস করা হয়।
বালুচরা বাজারের আলমদিনা টেলিকম ডিপার্টমেন্টাল স্টোরকে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা করে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য পণ্য ধ্বংস করা হয়। মেডিসিন বাজার ফার্মেসিকে মেয়াদবিহীন কাটা ওষুধ সংরক্ষণ করায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা করে বর্ণিত ওষুধ ধ্বংস করা হয়। মাস্টার ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও মেয়াদবিহীন কাটা ওষুধ শেল্ফে সংরক্ষণ করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে বর্ণিত ওসুধ ধ্বংস করা হয়।
বালুচরা বাজারের জামান হোটেল অ্যান্ড বিরানী হাউসকে কিচেনে খোলা ময়লার পাত্র রাখা, রান্না করা খাদ্যাদ্রব্য খোলা রাখা, ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংসের সাথে ভাত ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য রাখায় ও তাদের উৎপাদিত দইয়ে মেয়াদ না দেয়ায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়।
চট্টগ্রামের এপিবিএন-৯ এর সহায়তায় এসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিদকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ, সহকারি পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা ও চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এই অভিযান পরিচালনা করেন।