কলঙ্কের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট রেইনহার্ড গ্রিন্ডেল। তিন বছর তিনি ইউরোপে শক্তিধর ফুটবল সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সম্প্রতি জার্মান খবরের কাগজে গ্রিন্ডেল সম্পর্কে যা বেরিয়েছে, তারপর নিজেই কলঙ্কের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
প্রেসিডেন্টকে নিয়ে খবর বেরোতেই তার জায়গায় বিশ্বজয়ী জার্মানি দলের অধিনায়ক ফিলিপ লামের নাম শোনা যাচ্ছে। আরেক বিশ্বজয়ী সাবেক অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউস গ্রিন্ডেলের পদত্যাগের জোরাল দাবি তুলেছিলেন।
জার্মান মিডিয়ার খবর, গত মৌসুমে প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্টে ৭৮ হাজার ইউরো ঢুকেছে। ফুটবলের সঙ্গে জড়িতে একটি ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে কাজ পাইয়ে দেয়ার উপহার স্বরূপ।
এখানেই শেষ নয়, একটি দামী হাতঘড়ি তিনি নিয়েছেন ইউক্রেনের ফুটবল প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে। যিনি ২০১৭ সালে উয়েফায় থাকাকালীন গ্রিন্ডেলকে ঘড়িটি উপহার দিয়েছিলেন। যা নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার মুখে।
কলঙ্কের দায় নিয়ে পদত্যাগের ঘটনা জার্মান ফুটবলে এই প্রথম নয়। ২০০৬ বিশ্বকাপে ঘুষ কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উল্ফগ্যাং নিয়েরবাচে। আর ২০১৬ সালে ফুটবল প্রেসিডেন্ট পদে বসেছিলেন গ্রিন্ডেল।
এছাড়া আয়কর দপ্তরের কোপে পড়ে জেলে যেতে হয়েছিল সাবেক বিশ্বকাপার উলি হোয়েনেসকে। বায়ার্ন মিউনিখে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় তিনি কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। সে কারণে জেল হয়েছিল।
গ্রিন্ডেলের তিন বছরে দায়িত্বে থাকার সময় একাধিক ঘটনা ঘটেছিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য মেসুত ওজিল ও গুন্দোগানকে ভৎর্সনা করা হয়। ওজিল আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন। চিনের যুব দলকে বুন্দেশলিগায় একেবারে নীচের ডিভিসনে খেলিয়ে ছিলেন কলঙ্কিত প্রেসিডেন্ট। বিভিন্ন ক্লাবের প্রতিবাদে চিনের জুনিয়র দল মাঝপথে দেশে ফিরে গিয়েছিল।
২০১৮ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর অন্য সদস্যেদের ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও জোয়াকিম লোকে কোচের দায়িত্বে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। তারপরে সদ্য মুলার-হামেলস-বোয়াটেংকে জাতীয় দল থেকে ছেঁটে দেয়ার পেছনেও অনেকে গ্রিন্ডেলের হাত দেখতে পান।
দেশের মধ্যে তাকে নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাইছিলেন না। কিন্তু তাকে নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ হতেই সোমবার জার্মানি ফুটবলের মিউজিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্রিন্ডেলকে দেখা যায়নি।