চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঘুষ নয় অনুদান নিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আলোচিত-সমালোচিত ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) কেলেঙ্কারি’ থেকে রেহাই পেলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অ্যাপান্ডি আলি।

ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিকে ঘিরে তিনটি তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তে কোনো ঘুষ বা অন্য কোনো ধরনের অর্থ কেলেঙ্কারির তথ্য আমরা পাইনি। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যে অর্থ পাওয়া গিয়েছিল, তা সৌদি রাজপরিবারের দেওয়া অনুদান।

তবে কেন এ অর্থ অনুদান দেওয়া হয়েছিল তা জানাতে পারেননি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেছেন, এটা সৌদি রাজপরিবার ও প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। তবে এটুকু পরিষ্কারভাবে বলা যায়, নজিব রাজাক কোনো অপরাধ করেননি।

ওয়ানএমডিবি মালয়েশিয়ার সরকারের একটি কৌশলগত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। বৈশ্বিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে দেশের দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল তেরেঙ্গানু ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি (টিআইএ)। ২০০৮ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরের বছর, ২০০৯ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ।

তবে প্রথম থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন নজিব রাজাক। তিনি বলেছিলেন, এ অর্থ ওয়ানএমডিবি’র নয়। মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে অনুদান হিসেবে এসেছে এ অর্থ।

সৌদি রাজপরিবার ৬৮১ মিলিয়ন ডলার (৫,৩২৯ কোটি টাকা) অর্থ অনুদান দিয়েছিল উল্লেখ করে মোহাম্মদ অ্যাপান্ডি আলি আরো জানান, সৌদি অনুদানের অর্থ ব্যবহার না হওয়ায় এর মধ্যে ৬২০ মিলিয়ন ডলার (৪,৮৫২ কোটি টাকা) ফেরতও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি জানান, দেশের দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তে জানা গেছে, ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে অনুদানের অর্থ ট্রান্সফার করা হয়। আর একই বছর আগস্টে ৬২০ মিলিয়ন ডলার ফেরতও দেন নজিব। তবে বাকি ৮১ মিলিয়ন ডলারের (৬৩৪ কোটি টাকা) কি হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি অ্যাটর্নি জেনারেল।

প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক এ ব্যাপারে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিতে অনেকেই তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ দেখতে পাচ্ছিলেন।

এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে ‘ওয়ানএমডিবি’ বিতর্কের জন্ম হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলা হয়।

ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওয়ানএমডিবি ফান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২.৬ বিলিয়ন রিংগিত (৫,১৮৪ কোটি টাকা) জমা করা হয়েছে।

দেশটির আইন নির্বাচনের আগে দুই সপ্তাহের প্রচারণায় সর্বোচ্চ ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দিলেও রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থের উৎস প্রকাশের ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা রাখেনি। আইনের এই ফাঁক গলেই নজিব রাজাক এমন কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসেছেন বলে দাবি সমালোচকদের।