শিশু রাজন হত্যায় জড়িত অন্যতম আসামি কামরুলকে সৌদি আরব পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলো পুলিশ। আর এজন্য নেওয়া হয় ৬ লাখ টাকা ঘুষ। পুলিশের সঙ্গে চুক্তি হয় আরো ৬ লাখ দিলে গ্রেফতার হওয়া কামরুলের বড় ভাই মুহিত আলমকেও ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন http://bit.ly/1fEjqHk প্রকাশ করেছে সিলেটের অনলাইন নিউজপেপার সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি সর্বত্র জানাজানি হয়ে যাওয়ায় মুহিতকে পুলিশ ছাড়তে পারেনি।
নৃশংস নির্যাতনে খুন হওয়া শিশু সামিউর রহমান রাজনের পিতা আজিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে রাজনকে হত্যার পর বুধবার রাতে জালালাবাদ থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আমাকে থানা থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এসআই আমিরুল।
পুলিশ হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলো বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পেশায় মাইক্রোবাস চালক আজিজুর বুধবার সকালেই নিজের কাজে বের হয়ে যান। আর রাজন যায় সব্জি বিক্রি করতে। কিন্তু সন্ধ্যায়ও সে ফিরে না আসায় তার খোঁজ পড়ে।
তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসআই আমিরুল রাজনের লাশের ছবি দেখায় তার মোবাইল ফোনে। এরপর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ সনাক্ত করে থানায় যাই মামলা করতে।’
রাজনের পিতা জানান, ‘ততক্ষনে এসআই আমিরুল অজ্ঞাতদের নামে মামলা করে বসে আছেন। আমি আসামিদের নাম ধরে মামলা করতে চাইলে এক পর্যায়ে এসআই আমিরুল আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘এরপর পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। চারদিন পর পত্রিকায় খবর বের হলে পুলিশ তৎপর হয়। পুলিশ কোনো আসামিকে ধরেনি। মুহিত আলমকে পাবলিক ধরেছে।’
তবে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন এসআই আমিরুলের এই আচরণের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন থানায় ছিলাম না । মামলার সাক্ষী দিতে গিয়েছিলাম। পরে এসে রাজনের বাবার লিখিত অভিযোগকে এজাহার হিসেবে নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ‘এসআই আমিরুলের মামলায় কোনো আসামির নাম ছিল না। রাজনের বাবা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
তবে সৌদি আরবে পালিয়ে গেলেও প্রবাসীরা কামরুলকে ধরে সোমবার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
চুরির অভিযোগে ১৩ বছরের রাজনকে গত মঙ্গলবার পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিও চিত্রে দেখা দেখা যায়, শিশুটিকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি বাঁধা অবস্থায় শিশুটি পানি খেতে চাইলে তাকে ঘাম খেতে বলা হয়।
সিলেটের কুমারগাঁও উপজেলার বাস স্টেশন এলাকার সুন্দর আলি মার্কেটের সামনে নির্মম হত্যার ঘটনাটি ঘটে।