কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সোমবার ব্যাপক দরপতন ঘটলেও তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শেষ হয়েছে লেনদেন। এদিন শুরুতে কিছুটা পতন হলেও প্রথম ঘণ্টা পর থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। এক পর্যায়ে সূচক প্রায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ মিনিটের পতনে তা ১২ পয়েন্টে এসে স্থায়ী হয়। তবে ভীতি কাটিয়ে ব্যাংক খাতের একক আধিপত্যে বেড়েছে সূচক। ফলে সোমবার ব্যাপক পতনে থাকা সূচক রূপ নিয়েছে উত্থানে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাংকিং খাতে থাকা ৩০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির। আর কমেছে ৪টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ৩টি ব্যাংকের শেয়ার দর। তবে গ্রামীণফোনের শেয়ার দর বৃদ্ধিও সূচকে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।
সাধারণত পুঁজিবাজারে বাজার মূলধনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে ব্যাংক। গত দুই মাস ধরে বড় বিনিয়োগকারীদেরও লক্ষ্যবস্তু হয় ব্যাংকিং খাত। ফলে একটানা ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে এ খাতের লেনদেন ও শেয়ার দর।
কিন্তু নিয়ম ভেঙ্গে বাজারে বেশি বিনিয়োগ করার দায়ে সাতটি ব্যাংককে জরিমানা ও কয়েকটি ব্যাংককে নজরদারিতে রাখার খবর প্রকাশের পর ব্যাপক দরপতন ঘটে ব্যাংক খাতে। যার প্রভাব পড়ে পুরো বাজারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার সংশোধন হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কিছু নাই। সোমবার ব্যাপক সংশোধন হয়েছে। এখন আবার একটা পর্যায়ে চলে এসেছে। তাই অনেকেই আবার ব্যাংকের শেয়ার কিনছেন।
তবে বিনিয়োগকারীদের এসব বিষয়ে অতি লোভ না করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গতকাল ব্যাংক খাতের কারণে কিছুটা কমেছে, আজ আবার বেড়েছে। বাড়বে কমবে এটাই বাজারের প্রকৃতি।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইর সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর আগের দিনের তুলনায় টাকার অংকে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬,১৪১ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১,৩৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ২২০৭ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৩১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১৮৮টির আর অপরিবর্তিত থাকে ৩৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। যা টাকায় লেনদেন হয়েছে ৭৬৫ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
সোমবার ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৭৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছিল ৬১২৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৩৪৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ২১৯৯ পয়েন্টে। ওইদিন লেনদেন হয় ৯৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। সে হিসেবে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২০২ কোটি ৭৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
অপর শেয়ার বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৯ হাজার ৯৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৩টির, কমেছে ১৩৫টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। টাকায় লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।