একাধিক সহজ সুযোগ হাতছাড়ার মহড়া, আর দুর্বল রক্ষণের খেসারত দিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ থেকে ছিটকে গেল বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে বুরুন্ডির কাছে ৩-০ গোলে হেরে শিরোপার মঞ্চে যাওয়া হল না স্বাগতিকদের। ঘরের মাঠের টুর্নামেন্টে তাতে ট্রফির লড়াইয়ের দিনে দর্শক বনে গেল বাংলাদেশ।
সেমিতে বুরুন্ডির এনসিমিরিমানা জসপিন হ্যাটট্রিক করেছেন। শনিবারের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ প্যালেস্টাইন। বুধবার প্রথম সেমিতে সিশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ গড়ে ফাইনালে গেছে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আসরের দ্বিতীয় সেমিতে ‘বি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন বুরুন্ডির বিপক্ষে পরীক্ষায় নেমেছিল ‘এ’ গ্রুপে রানার্সআপ বাংলাদেশ। দারুণসব সুযোগ সৃষ্টি করেও গোল আদায় করতে না পারার জন্য ভুগল জেমি ডের শিষ্যরা।
গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে মতিন মিয়ার জোড়া গোলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানের জয়ে সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছিল স্বাগতিকরা। এদিন শুরুতেই তাকে হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দর্শকরা নড়েচড়ে বসার আগেই পঞ্চম মিনিটে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় এ ফরোয়ার্ডকে।
জামাল ভূঁইয়ার দল ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে খেলার চেষ্টায় ছিল। বল দখলের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষের কাছাকাছি নম্বর তাদের! সপ্তম মিনিটে বদলি সুফিলের ক্রসে ইব্রাহিমের শট আটকে যায় অতিথি গোলরক্ষকের গ্লাভসে। তখন পাল্টা আক্রমণে বুরুন্ডি ভীতি ছড়িয়েছিল। গোলরক্ষক রানার নৈপুণ্যে সেদফা রক্ষা পায় স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ২২ মিনিটে বুরুন্ডির এক ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন সুফিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। দুই মিনিট পর বাংলাদেশের আরেকটি গোছানো আক্রমণে হতাশার ফিনিশিংই আসে।
পরে আরও এক হালি বার বুরুন্ডি বক্সে বল টেনে নিয়েও জালমুখ খুলতে পারেনি বাংলাদেশ।
খেলার ধারার বিপরীতে উল্টো প্রথমার্ধের শেষদিকে চার মিনিটে দুই গোল করে বসে বুরুন্ডি। বাংলাদেশের রক্ষণ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ৪৩ মিনিটে লিড আনের জসপিন। এ অর্ধের যোগ করা সময়ে হেডে আরেকটি গোল করে বিরতিতে যান তিনি।
মধ্যবিরতির পর ফিরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে বুরুন্ডি। ৪৮ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন সাদউদ্দিনও। ৬১ মিনিটে সুফিলের দারুণ হেড আটকে যায় অতিথি গোলরক্ষকের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে। পরের মিনিটে আরেকটি সুযোগ বাংলাদেশ হারায় রাফির হেডে আসা বল বার ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে জামালের ফ্রি-কিক বুরুন্ডি গোলরক্ষক দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন। ৭৮ মিনিটে বক্সের মধ্যে বল পেয়েও পোস্টের অনেক উপর দিয়ে মারেন রাকিব। পরের মিনিটেই হ্যাটট্রিক গোলটি করে বসেন জসপিন। বুরুন্ডির এ ফরোয়ার্ডের টুর্নামেন্টে গোল হল ৭টি, যা সর্বোচ্চ।
ম্যাচের ৮৪ মিনিটে রিয়াদুলের দারুণ প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফেরান বুরুন্ডি গোলরক্ষক। যোগ করা সময়েও স্বাগতিকদের সামনে দেয়াল সেই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকই, হেড করেছিলেন সাদ। মেলেনি সান্ত্বনার গোলটিও!