চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঘটনার দায় নিতে হবে

করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছিলেন টাঙ্গাইলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আবাসিক ছাত্রীরা। কিন্তু বিধিবাম! দীর্ঘদিন পর হলে ফিরে জানলেন, তাদের প্রত্যেকটি রুমেই বড় রকমের চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই চুরির ঘটনা আবার একদিনে ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগে; বেশ সময় নিয়ে কয়েকদিন ধরে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই চুরির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। কারণ হলের নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল। আর এই অবহেলার কারণেই তাদের মূল্যবান সার্টিফিকেটসহ কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গেছে চোরেরা। অবশ্য তাদের এমন অভিযোগের ভিত্তিও আছে। বন্ধ হোক, কিংবা খোলা- শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবকিছুর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। সেই দায়িত্ব আরও বেড়ে যায় যখন কোনো বিশেষ পরিস্থিতির মুখে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের বাসভবন থেকে মাত্র পঁচিশ গজ দূরে অবস্থিত ওই হলের নিরাপত্তা বা রক্ষণাবেক্ষণে ব্যর্থতার পাশাপাশি আরেকটি ভয়াবহ অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ঘটনার খবর জেনেও সময় মতো ঘটনাস্থলেই আসেননি কলেজের অধ্যক্ষ। এমনকি তিনি ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ অধ্যক্ষ মো. বকতিয়ার হোসেন। তিনি বলতে চান, সেখানে তার কোনো অবহেলা নেই। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন নিজের বাসভবন থেকে মাত্র পঁচিশ গজ দূরের ভবনটির সবগুলো রুমে চুরির দায় তিনি নেবেন না কেন? এত কাছে থাকার পরও তার বাসা নিরাপদ থাকলো, কিন্তু ছাত্রীদের হলে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হলেও তিনি এতদিন তা জানলেন না কেন?

ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, এর আগেও বিভিন্ন আবাসিক হলে বারবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তার মানে হলো, আগের ধারাবাহিকতায় নতুন করে চুরির শঙ্কা থাকার পরও কর্তৃপক্ষের সাবধানতা অবলম্বন করেনি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অভাবেই মূলত চোরেরা সুযোগ পেয়েছে।

আমরা মনে করি, এই ঘটনার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বন্ধ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের জবাবহিতির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।