ভর্তি পরীক্ষায় ‘গ’ ইউনিটে ফেল করে ‘ঘ’ ইউনিটে প্রথম হওয়া জাহিদ হাসান আকাশের বিষয়টা খতিয়ে দেখছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সম্মিলিত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় প্রথম হয়েছে। যদিও এর আগে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে পাশ করতে পারেনি। গত মঙ্গলবার ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশের পর এক অনুসন্ধানে পাশ-ফেলের এসব তথ্য বেরিয়ে এলে আলোচনা-সমালোচনার মুখে ঢাবি প্রশাসন এমনটা জানালেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপার্চায (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখার সুযোগ এখনও রয়েছে। করণীয় এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।’
১২ অক্টোবর ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ৮১টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার দিনই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও এখনও তা প্রকাশ করা হয়নি। পরে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের অপরাধে ছয় জনকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় এই ইউনিটের ফল প্রকাশ স্থগিত করলেও অভিযোগের মধ্যে ফল ঘোষণা করে। ফলে দেখা যায়, ‘ঘ’ ইউনিটের ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর আগের বছর এই ইউনিটে পাশের হার ছিল ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এবছর ইউনিটটিতে (বিজ্ঞান শাখায় ২৪.৫৬ শতাংশ, মানবিকে ৪৭.৮৯ শতাংশ, ব্যবসায় ১৭.৯৪ শতাংশ) পাশ করেছে। বিগত বছরের ফল পর্যালোচনা করে দেখা যায় এটি অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় দুই থেকে আড়াই গুণ বেশি। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমতাবস্থায় প্রথম হওয়া শিক্ষার্থীর ফল ঘেঁটে তার নিজস্ব ‘গ’ ইউনিটে ফেল করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাহিদ হাসান আকাশ ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। গত ১২ অক্টোবর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেন। সেখানে ব্যবসায় শাখা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তিনি মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৯১.৬৬ নম্বর পেয়েছেন। অথচ তিনি বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ইংরেজ ফেল করছিলেন। ‘ঘ’ ইউনিটে তিনি বাংলায় ৩০ এর মধ্যে ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ২৭.৩০ পেয়েছেন। অথচ গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত গ ইউনিটের পরীক্ষায় বাংলায় পেয়েছিলেন ১০.৮ ইংরেজিতে পেয়েছিলেন ২.৪০।