গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সের করা উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচের দিকে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। এ তালিকায় বেশির ভাগ সূচকে উন্নতি করে এই অঞ্চলের নেতৃত্ব দিচ্ছে সিঙ্গাপুর। কিন্তু কেন উদ্ভাবনী শক্তির বিচারে এখনো এভাবে পিছিয়ে বাংলাদেশ?
চ্যানেল আই অনলাইনের এমন প্রশ্নের জবাবে এ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রিফাত শাহরিয়ার।
তিনি বলছেন, আমাদের দেশ উদ্ভাবনের দিকে থেকে এখনো পিছিয়ে; এর মূল কারণ হলো, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা করে বা ইনোভেশন করে- তাদের জন্য যথেষ্ট ফান্ড নেই। আর এসব কাজ বেশিরভাগই করে মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীরা। সিঙ্গাপুর বা অন্যান্য দেশেও গবেষণার কাজগুলো করে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা। আমদের এখানে পিএইচডি ও মাস্টার্সে সেভাবে স্কলারশিপ নেই।
‘তবে এখন কিছুটা ফান্ড আসছে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। শুরুতেই হয়তো আমরা প্রথম হতে পারবো না। তবে আগামী কয়েকবছরে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হবে।’
এমন আশার কথা শুনিয়ে রিফাত শাহরিয়ার পড়াশোনা বা উদ্ভাবন পরবর্তী কর্মক্ষেত্র নিয়ে বলেন, আমাদের এখান থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী মাস্টার্স করে। পরে শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে গিয়ে ভালো ভালো জায়গায় পিএইচডি, মাস্টার্স করে সেখানে অবদান রাখছে। তাদেরকে আমরা কোনোভাবেই ধরে রাখতে পারছি না। ওদের ধরে রাখতে পারলে তারা দেশেই অবদান রাখতো। অথচ তারা অন্য দেশের জন্য নিজেদের মেধা কাজে লাগাচ্ছে।
‘দেশে তাদের জন্য কর্মক্ষেত্রও কম। অনেকেই দেশের বাইরে গিয়ে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ করছে। আমাদের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন কাঠামো খুব একটা ভালো না; যা তাদেরকে আকর্ষণ করে।বেতন কাঠামো ভালো হলে অনেকেই দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতো না।’
সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সের তালিকায় এশিয়ার মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুর। ওই প্রতিবেদনে পরবর্তী দশকে শক্তি উদ্ভাবনের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন: জ্বালানি ক্ষেত্রে উদ্ভাবন, উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং ব্যবহারের মতো ক্ষেত্র যেখানে সফলতা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তৃতীয় স্থানে জাপান। উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় পরের স্থানগুলোতে রয়েছে যথাক্রমে চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া ও ভারতের নাম।
উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় দশম স্থান দখল করেছে ছোট্ট দেশ ব্রুনেই। এরপরেই রয়েছে ফিলিপিন্স ও ইন্দোনেশিয়া।
আর উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এরপর এসেছে পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার নাম।
২০০৭ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স। উদ্ভাবনীতে একটি দেশের কতটা সামর্থ ও সফলতা রয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে করনেল ইউনিভার্সিটি, ইনসিড এবং দি ওয়ার্ল্ড ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন।