চট্টগ্রাম থেকে: জয়ের কোনো বিকল্প নেই, এমন সমীকরণের সামনে হেরেই গেল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। মালয়েশিয়ার ক্লাব তেরেঙ্গানু এফসির কাছে ৪-২ গোলে হেরে বিদায় নিল শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের গ্রুপপর্ব থেকেই।
বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে গ্রুপ ‘বি’তে সেরা হয়েছে তেরেঙ্গানু। তাদের পয়েন্ট ৭। সমান পয়েন্ট আর সমান গোলব্যবধান আছে গোকুলম কেরালা এফসিরও। তবে তেরেঙ্গানু গোল বেশি করায় তারাই হয়েছে সেরা।
সোমবারের সেমিফাইনালে তেরেঙ্গানুর প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘এ’ রানার্সআপ মোহনবাগান। একইদিনে রানার্সআপ গোকুলমের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী।
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ থাকল সফরকারীদের হাতেই। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় এদিন ডাগআউটে ছিলেন না হেড কোচ অস্কার ব্রুজেন। দায়িত্ব সামলেছেন বসুন্ধরার সহকারী কোচ মাহাবুব হোসেন রক্সি। মূল কোচের অনুপস্থিতিই যেন নড়বড়ে করে দিল কিংসদের!
নবম মিনিটে পরপর দুইবার গোল হজম করা থেকে বসুন্ধরাকে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙ্গে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে যাওয়া ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত জাপানী ফরোয়ার্ড ব্রুনো সুজুকির শট ঠেকিয়ে দেন জিকো। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন সফিক বিন ইসমাঈল। বসুন্ধরা গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন সেই শটও।
পরে ১৫ মিনিটে সুযোগ মিলেছিল বসুন্ধরারও। বিশ্বনাথ ঘোষের ক্রসে মোহাম্মদ জালাল কুদ হেডে বল সোজা পথে থাকলেই মিলতো গোল।
ম্যাচের ১৮ মিনিটে আবারও আক্রমণে তেরেঙ্গুনা। এবারও আতঙ্ক ছড়িয়েছেন ব্রুনো। ডানপ্রান্ত দিয়ে নেয়া তার কোনাকুনি শট বার ঘেঁষে চলে গেছে বাইরে।
তবে তেরেঙ্গানুর চোখ রাঙ্গানো উপেক্ষা করে ২৭ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে বসুন্ধরা। ডানপাশ দিয়ে জাল বরাবর শট নিয়েছিলেন জালাল। তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়ে বামপাশে বিশ্বনাথ ঘোষের পায়ে। বিশ্বনাথ উড়িয়ে ক্রস দিলে তা হেডে জাল জড়িয়ে কিংসদের এগিয়ে দেন অধিনায়ক ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস।
প্রথমার্ধের ৪৪ মিনিটে সফিক বিন ইসমাঈলকে নিজেদের ডি-বক্সে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। স্পটকিকে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক লি টাক।
এঅর্ধের অতিরিক্ত সময়ে আবারও ডি-বক্সে ফাউলের শিকার সফিক বিন ইসমাঈল। এবার পেছন থেকে তাকে ফাউলকারী বখতিয়ার দুশানবে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাঁজাতে এক মুহূর্তও সময় নেননি। এবারও স্পটকিকে গোল করেছেন লি টাক।
ম্যাচের ৫৭ ও ৫৮ মিনিটে যে দুই সুযোগ খুইয়েছেন কলিন্দ্রেস, তাতে মাথাই ঠোকার কথা বসুন্ধরা সমর্থকদের। প্রথম সুযোগটি ছিল মতিন মিয়াঁর ক্রস থেকে। কলিন্দ্রেস সেই ক্রসে পা ছোঁয়ালেন ঠিকই, কিন্তু পা পিছলে তার সেই সুযোগ হয়েছে ধূলিসাৎ। পরের মিনিটে কোস্টারিকান তারকার কোনাকুনি শট বাঁ-বারের কয়েক সেন্টিমিটার দূর দিয়ে চলে গেছে বাইরে।
পরে ৭৪ মিনিটে বসুন্ধরার স্বপ্নের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন লি টাক। ২৫ গজ দূর থেকে এই ব্রিটিশ প্লে-মেকারের বুলেট গতির শটে কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষক জিকোর।
তিন মিনিট পর ৭৭ মিনিটে তেরেঙ্গানুর চতুর্থ গোলেও থাকল লি টাকের নাম। তার পাসে বসুন্ধরার খেলোয়াড়দের বোকা বানিয়ে চোখ জুড়ানো এক মাটি কামড়ানো শটে গোল তুলে নেন মোহাম্মদ বিন আলিয়াস। ৮৩ মিনিটে কলিন্দ্রেসের কাটব্যাকে এক গোল শোধ দিয়ে কিংসদের হারের ব্যবধান কমান মোহাম্মদ জালাল।