গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা ও নারী নেতৃত্বের সম্মাননা পেয়েছেন ছয়জন গ্রামীণ নারী। দু’টি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে এই সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- ‘গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা’ ও ‘গ্রামীণ নারী নেতৃত্ব’।
গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা ক্যাটেগরিতে তিনজন বিজয়ী হলেন- মোছা. জমিলা বেগম, শাপলা দেবী ত্রিপুরা ও শিরিন আক্তার আশা। এবং গ্রামীণ নারী নেতৃত্ব ক্যাটেগরিতে বিজয়ী হয়েছেন- খুজিস্থা বেগম জোনাকী, সাবিত্রী হেমব্রম ও মনিষা মীম নিপুণ।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে আন্তর্জান্তিক গ্রামীণ নারী দিবসকে সামনে রেখে সম্প্রতি, ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘ইউকে এইড’ এর সহায়তায় ‘আলোকিত শিশু’ ও ‘ভলান্টিয়ার অপরচুনিটিজ’ আয়োজন করে ‘আলোকিত গ্রামীণ নারী সম্মাননা ২০২১’ অনুষ্ঠান।
এই আয়োজনের মূল স্লোগান ছিল “গ্ৰামীণ নারী দিবসের দাবি, ঘরে ঘরে নারীর কাজের স্বীকৃতি”।
এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল আলোকিত গ্রামীণ নারীদের সফল হয়ে ওঠার পেছনের গল্পগুলো জানা এবং তাদের কমিউনিটিতে অসাধারণ নেতৃত্ব বা অবদানের জন্য সন্মাননা প্রদান করা। মূলত পুরস্কার বিতরণের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীদের প্রাপ্য সম্মান, স্বীকৃতি ও অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দেশব্যপী আটটি বিভাগের ত্রিশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সাক্ষরিত ১১ হাজার লিখিত অঙ্গীকারনামা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
“স্বাক্ষর হোক পরিবর্তনের অঙ্গীকারনামায়” শীর্ষক এই আয়োজনে লক্ষ্য ছিল ১০ হাজার তরুণ থেকে গ্রামীণ নারীর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ অঙ্গীকার ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করা। এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১১ হাজার তরুণ গ্রামীণ নারীদের জন্য ভিন্নরূপী অঙ্গীকার যেমন- নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতারোধ, বাল্যবিবাহ রোধ, গ্রামীণ নারীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকারী বরাদ্দ নিশ্চিতসহ বিভিন্ন অঙ্গীকার লিখে ও স্বাক্ষর করে সংহতি জানান।
প্রধান অথিতির বক্তব্যে সাংসদ আরোমা দত্ত বলেন, ‘আজকের আয়োজনে যারা বিজয়ী হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন তারা দেশের জন্য দৃষ্টান্ত এবং গর্ব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক রেজোয়ান হক গ্রামীণ নারীদের কাজের স্বীকৃতির গুরুত্ব ও নারী-পুরুষ বিভেদ দূর করে পরিপূর্ণ মানুষ হবার আহ্বান জানান।
অভিনেত্রী শম্পা রেজা বলেন, ‘নারী ও পুরুষের পার্থক্য কেবল বাহিরের অবয়বে। তাই বাহিরটা ভেদ করে অন্তরের উন্নয়নের লক্ষ্য রাখতে হবে।’
গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার বিজয়ী মোছা. জমিলা বেগম, একজন নারী কসাই, তিনি তার এই পেশার অভিজ্ঞতা ব্যাখা করেন।
তিনি বলেন, ‘‘শুরুতে যখন এই পেশায় আসি, তখন কেউ এটিকে ভালো চোখে দেখেনি। অনেকে অনেক রকম কথা শুনিয়েছে। কিন্তু আজ যখন বিভিন্ন জায়গা থেকে এতো সম্মাননা পাই তখন মনে হয় আমি ভুল পথে এগোইনি।’’
গ্রামীণ নারী নেতৃত্ব ক্যাটাগরির একজন বিজয়ী সাবিত্রী হেমব্রম তার আদিবাসী অধিকার আদায়ের যাত্রার কথা বলেন।