চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

গ্যাস সঞ্চালন চার্জ ৮৯ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ

গ্যাস সঞ্চালনে ৮৯ শতাংশ চার্জ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বিইআরসির কারিগরি
কমিটি। তবে এটা অযৌক্তিক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। বর্তমানে প্রতি হাজার
ঘনফুট গ্যাস সঞ্চালনে জিটিসিএল ১৫ পয়সা; চার্জ নেয়। এটা বাড়িয়ে ২৯ পয়সা
করার সুপারিশ করা হয়েছে।

রোববার টিসিবি মিলনায়তনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) জিটিসিএল এর গ্যাস সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর  প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী করে। শুনানীতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি চার্জ বাড়ানোর সুপারিশ করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে।

শুনানি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান এন আর খান, সদস্য মাকসুদুল হক ও রহমান মুর্শেদ।

জিটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব সারওয়ার, পরিচালক (অর্থ) শরিফুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি উপস্থান করেন।

অন্যদিকে ভোক্তাদের পক্ষে  অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাতলুব আহমেদ, ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলমসহ বিভিন্ন পেশা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে গ্যাসের সঞ্চালন চার্জ না বাড়ানোর পক্ষে মতামত উপস্থাপন করেন।

গণশুনানীতে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ নুরুল ইসলাম বলেন, যে কোম্পানি মুনাফা করছে তার গ্যাসের সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর কোনো যুক্তিই নেই। সাধারণ মানুষের এতে সরাসরি প্রভাব না পড়লেও বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর এই প্রভাব পড়বে। যার পরোক্ষ প্রভাব গ্রাহকদেরই ঘাড়ে চলে আসবে। গ্যাসের পাইকারি দাম নির্ধারনের পরেই সঞ্চালনের চার্জ নির্ধারণ করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ড. এম শামসুল আলম বলেন, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) এখনই লাভ করছে। দাম বাড়ানোর যুক্তির সঙ্গে আয় ও ব্যয়ের সমন্বয় থাকা দরকার। এখানে তা নেই। সমন্বয় করলে চার্জ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। জিটিসিএল এর একজন চাকুরিজীবী বছরের চার লাখ টাকা বাড়তি বোনাস নিচ্ছেন। যে কোম্পানি একজন চাকুরিজীবীকে এই পরিমাণ বোনাস দিচ্ছে তার মুনাফা বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এজন্য লাভে থাকা কোম্পানির গ্যাস সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, গ্যাস সঞ্চালনে জিটিসিএল যে পরিকল্পনা করেছে তাও বাস্তবায়নযোগ্য নয়। গ্যাস নেই অথচ সঞ্চালন লাইন হচ্ছে একটার পর একটা। এটা বাস্তবসম্মত নয়। এটা অযৌক্তিক।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, উচ্চ মূল্যে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির কথা বলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এলএনজি আরও দুই বছর পরে আসবে। আর এখনই বাড়ালে তার ভার জনগণ বইবে না।

বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, সব পক্ষের মতামত আমলে নিয়ে এই দাম ঠিক করা হবে।

জিটিসিএল এর প্রস্তাব মূল্যায়ন করে বিআইআরসি কারিগরি কমিটি জানিয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জিটিসিএল এর রাজস্বের পরিমাণ চার হাজার ২৬৯ দশমিক ১৫ মিলিয়ন টাকা । মোট রাজস্বের চাহিদা সাত হাজার ৪৩৪ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টাকা। এই রাজস্বের চাহিদা অনুযায়ি জিটিসিএল এর খরচ দাঁড়ায় প্রতি মিটারে ৩২ পয়সা।

এদিকে বিইআরসি কার্যালয়ের সামনে গণশুনানীর প্রতিবাদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে গণসংহতি আন্দোলন। শুনানী শুরুর পরপরই তারা বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী করবে বিইআরসি।