গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার, কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি এলাকায় গ্যাস সংকট ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় ওইসব এলাকায় সাড়ি ৩শ পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিজিএমইএ ভবনে তৈরি পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে এক সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করা হয়। ওই সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যানজটে পোশাক খাত স্থবির হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঢাকায় ও এর আশেপাশে ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। ফলে ঢাকা থেকে গাজীপুর, আশুলিয়া যেতে তিন ঘন্টা আসতে তিন ঘন্টা মোট ছয় ঘন্টা সময় লেগে যায়। এ কারণে কারখানার মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজে যেতে চান না। এতে উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। তাই ঢাকা থেকে গাজীপুর সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি।
পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানি ত্বরান্বিত করতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো অনেক সমস্যা আছে। পণ্য পরিবহন সংকট কাটেনি। এই জন্য শাহাজালাল বিমান বন্দরেরর জন্য আমদানিকৃত দুটি ইডিএস মেশিন কার্যকর করা, বিমান বন্দরের ফ্রেইট হ্যান্ডেলিং ও স্টোরেজ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ এই পোশাক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, প্রতিবছর চট্টগ্রাম বন্দরে পরিবহন বাড়ছে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ হারে। এই জন্য বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার ছিল কমপক্ষে ২০ শতাংশ। অথচ তা হয়নি। গত ৪০ বছরে ৬০টি জেটি হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ৭টি। পর্যাপ্ত জেটি না থাকায় জাহাজ জটের কারণে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনার কারণে পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় আমদানি করা কাঁচামাল খালাসে ১০ থেকে ১৫ দিন বেশি লাগছে। এর খেশারত দিতে হচ্ছে পোশাক শিল্পকে।
ভবিষ্যতে দেশীয় পোশাক শিল্পের বাজার ভারত নিয়ে যেতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, প্রতি বছর আমাদের গার্মেন্টস সেক্টরে গড়ে ১৩ শতাংশের উপর প্রবৃদ্ধি থাকতো।কিন্তু গত বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। অথচ ভারতে গড় প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশের উপরে। তাহলে আমরা কিভাবে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করে টিকে থাকবো? ভবিষ্যতে ভারত বাংলাদেশের পোশাকের বাজার নিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ভারত বিভিন্নভাবে তাদের পোশাক খাতকে সহযোগিতা করছে। কে কত বেশি সুবিধা দিতে পারে তা নিয়ে রাজ্যগুলো একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। এজন্যই বারবার বলেছি, বাংলাদেশে পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে আরো সহযোগিতা করুন।