ব্যাঙ্গালুরু(কর্নাটক),ভারত থেকে: গ্যালারি জুড়ে শুধু ‘ইশ, ইশ’ রব! এমন বাগে পেয়েও বাংলাদেশ হারাতে পারলো না অস্ট্রেলিয়াকে! পঞ্চাশ হাজার ধারণ ক্ষমতার এম চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দর্শক এসেছিলেন সতের হাজারের কিছু বেশি। তাদের বেশিরভাগ সোমবারের খেলায় বাংলাদেশকে সমর্থন করেছেন।
লক্ষ্য করার বিষয় ছিল চেন্নাস্বামীর দর্শকরাও এখন শুধু সাকিব না বাংলাদেশের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের নাম জানেন! কিন্তু এমন সমর্থন স্বত্বেও পারলোনা বাংলাদেশ! চেন্নাস্বামীর হতাশ দর্শকরা অতঃপর হতাশা নিয়েই ঘরে ফিরেছেন। তবে তারা দেখে গেছেন নড়েবড়ে এক অস্ট্রেলিয়াকে। উসমান খোয়াজা ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের বোলিং এটাকের সামনে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। কিন্তু এরপরও খেলার শেষ কৃতিত্ব হচ্ছে কে জিতেছে। নয় বল বাকি থাকতে জিতে গেছে অস্ট্রেলিয়া। এর মাধ্যমে তারা এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের লড়াইয়ে থাকলো। আর বাংলাদেশ ঢুকে গেলো নানান চান্সের হিসাবের মধ্যে!
সোমবার খেলা শুরুর তিন ঘণ্টা আগেও চেন্নাস্বামীতে গিয়ে প্রথম হোঁচট খেতে হয়। কাউন্টারে টিকেট নেই! অথচ কালোবাজারিরা টিকেটের জন্যে ডাকছিলেন! কিন্তু খেলাতো দেখতেই হবে। তাই বাধ্য হয়ে কালোবাজারিদের শরণাপন্ন হতেই হয়েছে। গ্যালারিতে ঢুকে বাংলাদেশি খুঁজতে এক রকম বাটি চালান দিতে হয়! গোটা গ্যালারিতে খুঁজে পাওয়া যায় তিনজন বাংলাদেশিকে! সব গ্যালারি মিলিয়ে কী একশ বাংলাদেশি ছিলেন? মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন!
তাসকিন-আরাফাত সানিকে হারানোর বেদনা নিয়ে বাংলাদেশ দলকে খেলায় নামতে হয়েছে। কিন্তু তামিমের বিষয়টি কি সুন্দর চেপে গিয়েছিল টিম বাংলাদেশ! ভারতের মতো নোংরা দেশে আমরা না হয় টাকার সমস্যায় বাধ্য হয়ে কমদামি হোটেলের খাবার খাই। কিন্তু তামিমরা যে হোটেলে আছেন সে হোটেলের খাবার খেয়ে তার কেনো পেটের পীড়া দেখা দেবে! মাঠের স্ক্রিনের তালিকায় তার নাম না দেখে দর্শকদের সেই যে ইশ! এর শুরু! গোটা ম্যাচের ক্ষণে ক্ষণে তা শুধু বেড়েছে!
ওপেননিং’এ মিঠুন আলীকে দেখে দর্শক খুশি হতে পারেননি। আশা ছিল সৌম্যকে নিয়ে। আবারও তিনি পারলেন না! সাব্বিরও পারলেন না! এর চেয়ে ক্রিজে বেশি সময় টিকে থাকেন মিঠুন আলী। সাকিব যখন নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছিলেন তখনই ফিরলেন! এরপর মাহমুদউল্লাহ ঝড়ের কারণে বাংলাদেশ দেড়শর কোঠা পেরুতে পেরেছে। এক রানের জন্যে তার পঞ্চাশ পূরণ হলোনা! ক্রিজে তাকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন তারই ভায়রা ভাই মুশফিক। বাংলাদেশের এই স্কোরকে কেউ কেউ সোহাগ করে লড়িয়ে স্কোর বললেও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের কাছে এটি যে কিছুই না তা মনে করিয়ে দিয়েছেন একা উসমান খোয়াজা।
এর আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এই ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলিং এটাকের সামনে এ দলের মিডল অর্ডার কেমন ঝরে পড়েছে তা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দলটির দুর্বলতা। এই প্রথম মুস্তাফিজের বিরুদ্ধে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। বুঝতে পেরেছে মুস্তাফিজের কাটারের বিষ! মুস্তাফিজ-সাকিবের কাছে লণ্ডভণ্ড হয় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার। কিন্তু উসমান যে ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন আর সাকলাইন সজিব যে রান দিয়েছেন তাতে আর অস্ট্রেলিয়াকে শরমে পড়তে হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্বল ফিল্ডিং শুধু ইশ ইশ বাড়িয়েছে চেন্নাস্বামীর সমর্থক দর্শকদের!
চেন্নাস্বামীতে প্রথমবার খেলতে নেমে জয়ের স্মৃতি জোগাড় করতে পারলো না টিম বাংলাদেশ! এই ভাঙ্গাচোরা মন নিয়ে তাদেরকে বুধবার (২৩ মার্চ) পড়তে হচ্ছে পাকিস্তানকে হারানো ধোনি বাহিনীর সামনে!