তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি অনুভব করি, এমন জায়গায় থাকলে বুদ্ধ ওই অসহায় মুসলিমদের সাহায্য করতেন।’
গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে সহিংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিব্বতের এই চতুর্দশ দালাই লামা শনিবার গণমাধ্যমের সামনে বলেন, তিনি মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি’কে জানাতে চান যে, যারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ‘হয়রানি’ করছে তাদের এসব আগ্রাসী কর্মকাণ্ড করার আগে মহামতি বুদ্ধের কথা একবার মনে করা উচিত।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৪শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখো রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।