জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশবরেণ্য ২০ জন নাগরিক এবং একটি প্রতিষ্ঠানের হাতে এ বছরের একুশে পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এসব ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার গ্রহণ করেন।
শিল্পকলায় অবদান রাখার জন্য এ বছর সংগীতে একুশে পদক পেয়েছেন বেগম ডালিয়া নওশিন, শঙ্কর রায় ও মিতা হক। নৃত্যে মো. গোলাম মোস্তফা খান, অভিনয়ে এম এম মহসীন এবং চারুকলায় অধ্যাপক শিল্পী ড. ফরিদা জামান।
ভাষা আন্দোলনে পদক পেয়েছেন আমিনুল ইসলাম বাদশা (মরণোত্তর)। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য পদক পেয়েছেন হাজি আক্তার সরদার, আব্দুল জব্বার, ডা. আ আ ম মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার)। তারা তিনজনই মরণোত্তর পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়াও সাংবাদিকতায় জাফর ওয়াজেদ (আলী ওয়াজেদ জাফর)। গবেষণায় ড. জাহাঙ্গীর আলম ও হাফেজ কারী আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ। শিক্ষায় অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া।
অর্থনীতিতে অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। সমাজসেবায় সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ভাষা ও সাহিত্যে ড. নুরুন নবী, মরহুম সিকদার আমিনুল হক (মরণোত্তর) ও বেগম নাজমুন নেসা পিয়ারি।
চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণায় একুশে পদক পাচ্ছে বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনিস্টিটিউট।
সম্মাননা প্রদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষা নিয়ে যারা গবেষণা করছেন, যারা কাজ করছে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘একুশ আমাদেনর শিখিয়েছে মাথা নত না করা। শিখিয়েছে আত্মমর্যাবোধ। এই রক্তাক্ষরেই লেখা হয়েছিলো আমাদের আগামীদিনের স্বাধীনতা।’
‘‘আমরা চাই এই গৌরবের ইতিহাস সবাই জানুক। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অন্য ভাষাকে শেখার প্রয়োজন আছে কিন্তু নিজের ভাষা ভুলে যাওয়া বা বিস্মৃত হওয়া মোটেও ঠিক নয়। ঘটনাচক্রে আমাদের দেশের বাইরে থাকতে হয় কিন্তু ভাষার মর্যাদা আমাদের সবসময় দিয়ে যেতে হবে।’’
গত এক দশকে আজ বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়েছে এই অগ্রযাত্রা যেনো অব্যাহত থাকে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন: ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এমনভাবে দেশকে গড়ে দিতে চাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম, যারা আসবে তারা যেনো সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশে বাস করতে পারে।’
অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন: ‘জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য। বিশ্বের কোথাও যেনো বাংলাদেশ শুনলে আর কেউ অবহেলা করতে না পারে। বাংলাদেশের নাম যেনো সবাই গর্বভরে নিতে পারে। বাঙালি হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’