প্রযুক্তিতে অন্ধ বিশ্বাস মাঝেমধ্যে মানুষকে ভালোই বিপাকে ফেলতে পারে, তারই প্রমাণ মিলল যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের শ’খানেক গাড়িচালক গুগল ম্যাপস দেখে অচেনা শর্টকাট রাস্তা ধরে গিয়ে মহাসড়কে ওঠার আশায় উল্টো গিয়ে পড়েছেন এক ধু ধু খোলা মাঠে।
সিএনএন জানায়, গত রোববার কলোরাডোর ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে পেনা বুলেভার্দে একটি সড়ক দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই সময় রাস্তায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফলে ওই পথ দিয়ে যাবে, এমন সব চালককেই একটি বিকল্প পথ দেখাচ্ছিল গুগল ম্যাপস অ্যাপ, যেন জ্যাম কাটিয়ে যাওয়া যায়। চালকরাও অ্যাপের ওপর ভরসা করে সেই বিকল্প পথ ধরে একের পর এক এগিয়ে যেতে থাকেন।
বিকল্প রাস্তাটি পাকা নয়, চওড়া মেঠো পথ। তার ওপর আগে হওয়া বৃষ্টিতে কাদামাটিতে যা-তা অবস্থা। কতদূর যাওয়ার পরই গাড়িগুলোর চাকা প্যাচপ্যাচে কাদায় এদিক ওদিক পিছলে যেতে থাকল।
অনেকগুলো গাড়ি গভীর কাদামাটিতে আর এগোতে না পেরে খোলা মাঠের মাঝখানে ওই রাস্তায় আটকে গেল। তার পেছনে আরও অনেকগুলো গাড়ি।
এভাবে শ’খানেক গাড়ির দীর্ঘ লাইন লেগে গেল গুগলের সেই ‘শর্টকাট’ মেঠো পথে।
গুগল ম্যাপের ওই শর্টকাট নির্দেশনার শিকার কনি মনসিজ। তিনি স্বামীকে বিমানবন্দর থেকে আনতে যাওয়ার পথে পেনা বুলেভার্দে সড়ক দুর্ঘটনার জটে পড়েন।
‘আমি ভাবলাম, হয়তো এই জ্যাম থেকে বাঁচতে বিকল্প কোনো রাস্তা আছে। গুগল ম্যাপস খুলে দেখলাম তারা আমাকে একটি বিকল্প পথ দেখাচ্ছে যেটা দিয়ে বিমানবন্দর যেতে অর্ধেক সময় লাগবে,’ বলেন কনি।
‘এমনিতে ৪৩ মিনিট লাগার কথা, কিন্তু এই শর্টকাটটি দিয়ে যেতে লাগবে মাত্র ২৩ মিনিট। তাই আমি মূল সড়ক থেকে নেমে গুগল ম্যাপসকেই অনুসরণ করলাম। আরও কয়েকটা গাড়ি ওই মাটির রাস্তা ধরে যাচ্ছিল। তাই ভাবলাম নিশ্চয়ই সব ঠিকঠাকই আছে।’
কিন্তু বাস্তবে আসলে কিছুই ঠিকঠাক ছিল না।
অবশ্য টেক জায়ান্ট গুগল সাফাই গেয়ে বলেছে, রাস্তাটি ব্যক্তিগত হিসেবে চিহ্নিত করা ছিল না। তাই রাস্তার আকার ও অবস্থান বিবেচনা করে সেটি সুপারিশ করা হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে চালকদেরকে যে কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে স্থানীয় আইন ও নীতিমালা এবং নিজেদের মনোযোগ ও বিচারবুদ্ধির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে রাস্তায় চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছে গুগল।