‘শাহনাজ রহমতউল্লাহর রক্তে ছিলো গান। গান গেয়ে মানুষকে কাঁদানোর ক্ষমতাও ছিলো শাহনাজের। এরকম ক্ষমতা খুব কম শিল্পীরই থাকে।’-সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহকে নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন তাঁর স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমত উল্লাহ।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেষ নিশঃশ্বাস ত্যাগ করেন শাহনাজ রহমতউল্লাহ। এমনটা জানিয়ে তার স্বামী বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে হঠাৎ শাহনাজ আমাকে বললো তার শরীর খারাপ করছে, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সে আমাকে বললো, আমি বোধহয় আর বাঁচবো না। আমি সাথে সাথে তাকে ধরে বিছানায় শুয়ে দিয়েছি, তার হাত ধরে বলেছি ‘ঠিক হয়ে যাবে’। কিন্তু তিন মিনিটের মধ্যে সে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো।
শাহনাজ রহমত উল্লাহ ও স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমত উল্লাহর দুই ছেলে মেয়ে। মেয়ে নাহিদ রহমত উল্লাহ থাকেন লন্ডনে আর ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ থাকেন কানাডায়।
মাকে শেষ দেখা না দেখতে পারলেও আগামি শুক্রবার মায়ের জন্য বিশেষ মোনাজাতে উপস্থিত থাকবেন ছেলে সায়েফ। এমনটাই জানালেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ’র স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার।
শাহনাজ রহমত উল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন এদেশের প্রখ্যাত একজন সুরকার এবং সংগীত পরিচালক। আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক।
এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল্, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ-এর মতো বেশকিছু দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহ’র গাওয়া চারটি গান স্থান পায়
গান গেয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই সংগীতশিল্পীকে ১৯৯২ সালে একুশে পদক দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’-এর আয়োজনে আজীবন সম্মাননা জানানো হয় গুণী এই শিল্পীকে।