ভার্চুয়াল আদালতে মামলা পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকায় ১৭ আইনজীবীকে তাদের পেশাগত কার্যক্রমে অংশ না নিতে গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ভার্চুয়াল আদালতে কোনো আইনজীবী মামলা পরিচালনা করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
১৭ আইনজীবীকে দেয়া নোটিশের বিষয়টি অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম রোববার আদালতের নজরে আনলে বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
এর আগে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন ধরে আদালত বন্ধ থাকায় অনেক আইনজীবী ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সোচ্চার হন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘ফুল কোর্ট সভা’ থেকে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারির জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। সে প্রেক্ষাপটে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে আদালতে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে “আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ- ২০২০” নামে গত ৯ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে গত ১০ মে ভার্চুয়াল আদালত সংক্রান্ত কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়। যেখানে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ দেয়া হয়। এছাড়া আইনজীবীদের জন্য প্রকাশ করা হয় ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’।
এরই ধারাবাহিতায় করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক সাধারণ ছুটি ও অবকাশকালীন ছুটি বা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত, হাইকোর্ট ও সারাদেশের অধস্তন আদালতগুলো ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়। এরপর গত ১১ মে দেশের ইতিহাসে প্রথম ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু গত ১৭ মে গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সাধারণ সভায় আপাতত ভার্চুয়াল কোর্টের সকল কার্যক্রম হতে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৭ জন আইনজীবী ভার্চুয়াল আদালতে মামলা পরিচালনায় সম্পৃক্ত হওয়ায় তারা পেশাগত কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না মর্মে নোটিশ দেওয়া হয়।
যে ১৭ জন আইনজীবীকে নোটিশ দেয়া হয় তারা হলেন, পিযুষ কান্তি পাল, এস এম মাজহারুল ইসলাম সোহেল, মো. শাহনেওয়াজ খান, মো. নওশাদুজ্জামান, মো. সরওয়ার হোসেন বাবুল, মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু, মো. রেজওয়ানুল হক মন্ডল, মো. আশরাফ আলী, বেগম বদরুন্নাহার, নিরঞ্জন কুমার ঘোষ, মো. আব্দুস সালাম, জি এম মুরাদ হাসান, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মুরাদজ্জামান রব্বানী, মো. আব্দুর রশীদ, খন্দকার মঞ্জুরুল করিম সোহেল ও মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার জিন্নাহ।