রাজধানী ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থার সমালোচনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের যে অর্জন, সেই অর্জনের সঙ্গে এই গরিব গাড়িগুলো আমাকে কষ্ট দেয়। আমি আবার এর মন্ত্রী। প্লিজ এই গরিব গরিব চেহারার গাড়িগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে নিন। এগুলো লজ্জা দেয়।
এ বিষয়ে পরিবহন মালিক নেতাদের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
রাজধানীতে গণপরিবহনে নারীদের যৌন হয়রানী রোধে র্যাংকস গ্রুপের তত্ত্বাবধায়নে বিশেষ বাস সার্ভিস ‘দোলনচাঁপা’র উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন: আমরা ৩০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি। সেখানে আমাদের রাস্তায় এমন লক্কড় ঝক্কড় গাড়ি চলবে। বিদেশিরা কি বলবে! এই লজ্জা থেকে আমাকে বাঁচান।
ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থা দেশের সার্বিক অর্থনীতির সঙ্গে বেমানান মন্তব্য করে কাদের বলেন, আমাদের অর্জন তার সঙ্গে গাড়িগুলো বড়ই বেমানান। আমাদের জিডিপি-মাথাপিছু আয় চিন্তা করুন। এমন দেশের রাজধানীতে কি এ গাড়িগুলো চলতে পারে! আমার মনে হয় ঢাকা শহরে যতো লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি চলে তা আমাদের গ্রাম অঞ্চলেও চলে না।
‘এগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই তারপরও চলছে। গতকাল ডেমরা গিয়েছিলাম। দেখলাম, সব ফিটনেসবিহীন গাড়ি রং করা হচ্ছে। এগুলোর আবার সামনে লেখা হচ্ছে ‘আল্লাহর নামে চলিলাম’! কিছু দূর চলিয়া দেখা যায় খাদের ভেতর চলিয়া যায়।’
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রংচং করে নতুন করার প্রবণতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন: এই গাড়িগুলো রংচং করেই মহাসড়কে উঠে পড়ে। কিছু দূর গিয়ে বিকল হয়ে পড়বে। রেকার দিয়ে সরাতে সরাতে দেখা যাবে ১০০ কি.মি জ্যাম লেগে গেছে। তাই পরিবহন মালিকদের বলবো এসব থেকে বিরত থাকুন।
মহানগরীতে গাড়ির পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পরিবহন মালিকদের অনুরোধ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন: আমার টাকা নাই। থাকবে কোথা থেকে? কোন সাইড বিজনেসও যে নাই। আমার পরিবারেরও কারও নাই। তাই আপনাদের অনুরোধ করি। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন সেটা এগিয়ে নিন। আমার সামনে যারা আছেন সকলেই বিগ বিজনেসের মানুষ।
দোলনচাঁপার উদ্যোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন: আমি শঙ্কিত হই যখন নতুন কিছু শুরু হয়। আমাদের শুরুটা হয় জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে আর শেষটা হয় পেনপেনানির মধ্য দিয়ে। তবে এবার আমি আশাবাদী। রউফ সাহেবের মতো মানুষ যখন এটা টেককেয়ার করছে। এখানকার টিম হাইলি কোয়ালিফাইড। ড্রাইভাররা হাইলি ট্রেইন্ড; কন্ট্রাক্টরও থাকবে মহিলা। স্বপ্ন আমরা অনেকই দেখি তবে সেটি সত্য করা কঠিন। তবে এটা অনেক অল্প সময়ে বাস্তবের পথ দেখলো। অভিযোগ যেনো এখানে না থাকে।
‘তবে এমন উদ্যোগ নতুন নয়। বিআরটিসির ২০টি বাস নারী যাত্রী সেবায় দায়িত্বরত রয়েছে। তবে অভিযোগ আছে অনেক। আবার এটা বেসরকারি উদ্যোগে হচ্ছে। তাই আমি আশা করবো এবার আর কোন অভিযোগ আসবে না।’
ভারতীয় ভলভো আইশার ভেইকেল লিমিটেডের সহযোগিতায় এবং দোলনচাঁপা প্রজেক্টের আওতায় এবার ১০টি বাস প্রথমবারের জন্য রাজধানীর রাস্তায় নামবে। এ পরিবহন সেবায় যাতায়াতে সুযোগ পাবেন শুধু নারী ও শিশুরা। পর্যায়ক্রমে এটি ৬০টি বাসে উত্তীর্ণ হবে।