ঢাবি প্রতিনিধি: শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী ২০ তম আন্তর্জাতিক গণিত সম্মেলন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় গণিত শিক্ষার মান উন্নয়ন ও তরুণ গবেষকদের গবেষণার দক্ষতা বাড়াত সাহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সম্মেলনে অংশ নেয়া গবেষকরা।
রোববার বিকেলে ২০ তম আন্তর্জাতিক গণিত সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গণিত সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাজেদা বানু।
সম্মেলনের তৃতীয় দিনে দুইটি প্যারালাল সেশনে মোট ৪৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। দেশী বিদেশী গণিতবিদরা তাদের গবেষণামূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনে তিন দিনে উপস্থাপিত সকল প্রবন্ধের মধ্যে বিদেশী বিচারক গণিতবিদ ফ্রান্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মাইকেল ওয়ালশমিট, জার্মানীর বিশিষ্ট গণিতবিদ ড. আব্দের রাহিম ওয়াজ্জী ও ভারতের অধ্যাপক এম পি চৌধুরীর বিচারে তিনজনকে সেরা ঘোষণা করা হয়। পরে তাদেরকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। সনদপ্রাপ্তরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের তাজনিন রহমান, কামরুন্নাহার কেয়া ও সাইফুল ইসলাম।
‘দক্ষিণ এশিয়ার গণিতবিদদের সেতুবন্ধ’ শিরোনামে আয়োজিত এই সম্মেলনে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, জাপান, শ্রীলঙ্কা ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০ জন গণিতবিদ অংশ নেন। এদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ৩০০ গণিতবিদ অংশ নেন। সম্মেলনে মোট ১৩০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশ গণিত সমিতির জার্নালে প্রকাশ করা হবে বলে জানান আয়োজকরা। বাংলাদেশ গণিত সমিতির সহযোগিতায় ২০তম এই সম্মেলন আয়োজনে আর্থিকভাবে সহায়তা করছে জাপানের কেসিও কোম্পানি ও মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কমসটেক।
সমাপনী অধিবেশনে সাজেদা বানু বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশী বিদেশী গণিতবিদদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাব বিনিময় হয়েছে যা তরুণ গবেষকদের কাজে দিবে। তবে তরুণদের মধ্যে দ্রুত উপস্থাপন করার একটি প্রবণতা রয়েছে যা শ্রোতাকে বুঝতে বাধা দেয়। আরেকটি দিক হলো এখন মেয়েদের গণিত নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সর্বোপরি এই সম্মেলনের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার গণিতের গবেষণা ও গণিত শিক্ষার মান উন্নয়নে আরও সহায়তা করবে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে সম্মেলনে অংশ নেয়া উত্তম ঘোষ বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের জ্ঞান ও ভাবের বিনিময় হয়েছে। যা আমাদের ভবিষ্যত জীবনে কাজে দিবে। এছাড়াও এই সম্মেলনে অংশ নিতে এসে বাংলাদেশের মানুষের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ হয়েছি।
গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী মিলনায়তনে শুরু হয় এই সম্মেলন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ মুজিবুর রহমান গণিত ভবনে অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তী দুই দিনের কার্যক্রম। বাংলাদেশ গণিত সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাজেদা বানুর সভাপতিত্ব সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ গণিতবিদ প্রফেসর ড. মুনিবুর রহমান চৌধুরী, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. অমল কৃষ্ণ হালদার ও সমিতির সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম। সভায় আগত অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ ও আমন্ত্রিত বিদেশী অতিথিদেরকে বাংলাদেশ গণিত সমিতির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।