মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের করা মামলা পরিচালনার জন্য অর্গানাইজেশন অফ ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) ও এর সদস্য দেশগুলোর কাছে তহবিল গঠনে সহায়তা চাইলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা সম্পর্কিত ওআইসির এ্যাডহক মন্ত্রিসভা কমিটি আজ এক পরামর্শমূলক সভায় রাষ্ট্রদূত এ আহবান জানান।
এতে ওআইসির সদস্য ভুক্ত বাংলাদেশ, তুরস্ক, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান, ও জিবুতির স্থায়ী প্রতিনিধিগন ছাড়াও সংস্থাটির মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ডক্টর মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী প্রথমেই মানবাধিকার লঙ্ঘনে মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে ওআইসির এডহক কমিটি এই আয়োজন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওআইসিকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া ওআইসির মহাসচিবকে আইসিজে মামলায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে সকলের সহায়তা কামনা করে বাংলাদেশের শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য রোহিঙ্গাদের এ সমস্যা চলতে পারেনা এবং গণহত্যার দায়ে দোষীরা শাস্তি এড়াতে পারেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সভায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান রোহিঙ্গাদের দুঃসময়ে আশ্রয় দিয়ে তাদের পাশে থাকার জন্য। রোহিঙ্গাদের দুর্দশা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংবেদনশীল করতে ওআইসির গৃহীত পদক্ষেপগুলি পর্যালোচনা করেন যা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বিশেষতঃ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের করা মামলার কাঠামোর মধ্যে। তিনি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবসনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।
মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন আইসিজে তে মামলা পরিচালনা করার ব্যায়ভার বহন করার জন্য যারা ইতিমধ্যে তহবিলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি অন্যান্য সদস্য দেশগুলোকে মানবাধিকার রক্ষায় এই মামলায় সহায়তা প্রদান সহ আন্তর্জাতিকভাবে দ্বিপাক্ষিক বহুপাক্ষিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভূমিকা পালন করা আহ্বান জানান। সভায় অংশগ্রহণকারীরা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সমর্থনের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন।