চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার শর্তে জামিন!

অনেক জল্পনা-কল্পনা আর নাটকীয়তার পরে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিনের শর্ত হিসেবে হাইকোর্ট কিছু শর্ত দিয়েছে মিন্নিকে, যা পালনে ব্যর্থ হলে তার জামিন বাতিল হবে বলেও জানিয়েছে দেশের উচ্চ আদালত।

মিন্নির জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট বলেছে মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং দুই. মিন্নিকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আসামি একজন নারী- এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমরা তাকে জামিন দেয়া ন্যায়সঙ্গত মনে করছি এবং জারি করা রুলটি আমরা যথাযথ ঘোষণা করলাম। সে তার বাবার জিম্মায় থাকবে এবং মিডিয়ার সামনে কোনো কথা বলতে পারবে না।’

এর আগে গত ২০ আগস্ট হাইকোর্টের এই বেঞ্চ মিন্নির জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয় এবং এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলার নথিসহ ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে তলব করা হয়। এছাড়া মিন্নি দোষ স্বীকার করেছে দাবি করে দেয়া সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে বরগুনার এসপিকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

প্রচলিত নিয়মে তদন্ত ও আইন নিজ ধারায় চলবে এটাই স্বাভাবিক, সেইধারাতেই হয়তো একটু দেরি হলেও ঘটনার প্রেক্ষাপট বিচারে মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এর আগে আদালত প্রাঙ্গণে মিন্নির মুখ চেপে ধরে কথা বলতে না দেয়ার ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল, এরপরে আদালতে এই বাধ্যবাধকতা নতুন করে প্রশ্ন করতে শুরু করেছে দেশের মানুষ। তাছাড়া জামিনের শর্ত হিসেবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা না বলার বাধ্যবাধকতার ঘটনা খুবই ব্যতিক্রম বলে আমাদের মনে হয়েছে।

আদালত সবসময় সত্য-ন্যায় ও আইনের আলোকিত পথে চালিত হয়। আর কোন গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা কখনই আদালতের সেই পথের বাধা হিসেবেতো নয়ই, বরং সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। আদালতের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ও সম্মান রেখে আমাদের আশাবাদ, এই ধরণের বিষয়ে জনমনে কোনো ধরণের অস্পষ্টতা তৈরি হবে না এবং দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে।