বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকা অন্যতম পুরোধা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু হয়েছে। এমন এক ব্যক্তিত্বের চিরবিদায় দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
মোহাম্মদ নাসিম বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তার বাবা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলীর আদর্শে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।
গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের প্রবাদ পুরুষ মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জের নিজ সংসদীয় আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় দেশের স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শুধু সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবেও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এজন্য বহুবার কারাবরণ করলেও তিনি দলের আদর্শ থেকে সরে যাননি।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে প্রগতিশীল চিন্তাধারার দলসমূহের জোট গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। জীবনের শেষ ক্ষণ পর্যন্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের যে জোরালো প্রচেষ্টা হয়েছিল, দেশের সেই দুর্দিনে মোহাম্মদ নাসিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি আজীবন বিরাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশকে গণতান্ত্রিক কাঠামোতে দাঁড় করতে সচেষ্ট ছিলেন।
এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর ফলে বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের এক মহীরুহ এবং একজন দেশপ্রেমিক ও জনমানুষের নেতাকে হারিয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ তার অবদানকে আজীবন মনে রাখবে। এই গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদের চিরবিদায়ে আমরা তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।