চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খোলা-বন্ধের খেলায় হাসে করোনা

আজ থেকে আবারও রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ ও প্রস্থানে কড়াকড়ি আরোপ করেছে প্রশাসন। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, মহামারীতে রূপ নেওয়া করোনাভাইরাস ঠেকাতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাজধানীতে আসা-যাওয়া করতে পারবে না।

শুধু তাই না, এ জন্য রাজধানীর প্রবেশ এবং বের হওয়ার পথে তল্লাশিও শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা না মানেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যথারীতি বলা হয়েছে, জরুরি সেবা ও পণ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে।

আমরা দেখেছি, এর আগে ২৬শে মার্চ যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। তার কয়েকদিন পর এভাবেই রাজধানীতে প্রবেশ এবং বের হওয়ায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল। চেকপোস্ট বসিয়ে, ব্যক্তিগত যানবাহন থামিয়ে সেই সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বেশ ভালোভাবেই ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে।

তবে কিছুদিন পর আবারও শিথিলতা। সেই সুযোগে যার যেমন ইচ্ছা চলা। করোনাভাইরাস বলে কিছু একটা আছে; অনেকেই তা ভুলে কারণে-অকারণে রাস্তায় নেমে পড়ে। বিশেষ করে মাসখানেক পর যখন রপ্তানিমুখি পোশাক কারখানাগুলো খোলার ঘোষণা দেওয়া হলো। তার কিছুদিন পর খুলে দেওয়া হলো দোকানপাট-শপিং মল।

আর এই সুযোগে বেড়ে গেলো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। অথচ যেদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো, সেদিনও দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত ছিল মাত্র ৪৪ জন। তার ৫১ দিন পর আজ সেই সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ২৬৮ জনে। সরকারি হিসেবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২৮ জন মানুষের।

চিত্রটা যখন এমন ভয়ংকর, তখন আমরা দেখছি- একবার রাজধানীতে নির্বিঘ্নে মানুষকে ঢুকতে ও বের হতে দেওয়া হচ্ছে; কিছুদিন পর আবার তাতে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। তার মানে এই খোলা আর বন্ধের পেছনে কোনো পরিকল্পনা যে নাই, সেটাও স্পষ্ট।

কিন্তু এমন হওয়ার কথা ছিল না। জীবিকার জন্য অঘোষিত লকডাউন শিথিল করার প্রয়োজন ছিল; তা না হয় মেনে নিলাম। তবে সেই শিথিলতাও ছিল শর্তযুক্ত। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা ছিল তাতে। যদিও শেষ পর্যন্ত তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেনে চলা হয়নি বলেই আমরা জেনেছি।

আমরা মনে করি, এই খোলা-বন্ধের খেলায় শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে করোনাভাইরাসেরই। পরিসংখ্যানও তাই বলছে। একবার কড়াকড়ি, আরেকবার শিথিলতায় কোনো লাভ হয় না। তাতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তাই এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই।