দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছন গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন: ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি গুরুতর সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্বিগ্ন। তবে হঠাৎ করেই দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়েনি। এটা দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি একথা বলেন। অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী: বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশই এখন খেলাপি ঋণ। গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকারও বেশি। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে গত তিন মাসেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ছয় হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।
ওই প্রতিবেদনে জানা যায়: এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ঋণ দিয়েছে সাত লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি ২১ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা বলেন: মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনে চার্জ কমছে না। বেশ কিছু পদক্ষেপের পর বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে এটা এখন কমানো সম্ভব নয়। কারণ এই সেবা থেকে এজেন্ট পর্যায়ের আয় অনেক কম।
তিনি বলেন: খরচ কমানোর বিষয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যারা ইতোমধ্যে ৫টি মিটিং করেছে। তবে এর সঙ্গে জড়িত স্টেকহোল্ডাররা ছাড় দিতে চায় না।
ধাতব মুদ্রা বিষয়ে শুভংকর সাহা বলেন: যে ব্যাংক বা ব্যবসায়ী কিংবা ব্যক্তি কয়েন নিতে চায় না তারা বেআইনি কাজ করছেন। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েনের ব্যবহার বন্ধ করেনি। গুজব কিংবা অসচেতনতা থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।
কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদ প্রদান করেন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান এবং মহাব্যবস্থাপক ড. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।